গৌতম মণ্ডল,  কাকদ্বীপ : পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে শাসিয়েছে দুষ্কৃতী দল। তার জেরে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে পঞ্চায়েত অফিসেই যেতে পারছেন না তৃণমূলের (TMC) পঞ্চায়েত উপপ্রধান ! কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, দুষ্কৃতীরা সকলেই নাকি তৃণমূল বিধায়কের ইশারায় চলছে। একথা জানিয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন উপপ্রধান। যদিও বিধায়কের দাবি, তিনি এসবের কিছুই জানেন না ! কাকদ্বীপে (Kakdwip) প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের অন্দরের বিরোধ। 


কী অভিযোগ ?


সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রকাশ্যে চলে এল শাসকদলের অন্দরের বিরোধ। দলীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে দুর্বৃত্তদের প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হলেন কাকদ্বীপের তৃণমূল নেতা ও পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দেবব্রত মাইতি। আর এই অভিযোগ তুলে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন তিনি! পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এমন ঘটনাকে ঘিরে সরগরম কাকদ্বীপের প্রতাপাদিত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা।


কাকদ্বীপ ব্লকের প্রতাপাদিত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩ বারের উপপ্রধান দেবব্রত মাইতি ওরফে বাদল। এই উপপ্রধান দেড় বছরের বেশি সময় ধরে তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতে ঢুকতে পারছেন না । তার কারণ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, ২০২১ সালের ৩১ অগাস্ট পঞ্চায়েত অফিসে কাজ করার সময়, প্রায় ৩৫ জন দুষকৃতীর দ্বারা আক্রান্ত হন তিনি। ওই দুষকৃতীরা কাকদ্বীপের তৃণমূল বিধায়কের নির্দেশে কাজ করছে বলে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।

বিধায়কের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা তাঁর বাড়িতেও হামলা চালায় বলে মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত উপপ্রধান।উপপ্রধানের অভিযোগ, প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে বারবার জানানো সত্ত্বেও, দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

ক্যামেরার সামনে সরাসরি দলের বিধায়কের বিরুদ্ধে মুখ না খুললেও, তিনি যে পঞ্চায়েতে যেতে পারছেন না, এবং তার জেরে উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হচ্ছে, সেই অভিযোগ করেছেন উপপ্রধান। প্রতাপাদিত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা দেবব্রত মাইতি বলেন, আমি ২০২১ সালের অগাস্টে পঞ্চায়েতে গিয়েছিলাম। বেশ কয়েকজন দু্কৃতী আমাকে পঞ্চায়েত থেকে জোর করে বের করে দেয়। তারপর থেকে আমি প্রাণ সংশয়ে আছি। তারপর থেকে পঞ্চায়েতে যাই না। বিষয়টি উচ্চ নেতৃত্ব ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের জানিয়েছি।

দুষ্কৃতী-যোগের অভিযোগ উড়িয়ে কাকদ্বীপের তৃণমূল বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরার দাবি, এবিষয়ে তাঁর কিছুই জানা নেই। তিনি বলেন, এটা পঞ্চায়েতের ব্যাপার। আমার জানা নেই। আমাকে জানালে ব্যবস্থা নিতাম।

ঘটনা সামনে আসতেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিরোধীরা। সিপিএমের কাকদ্বীপ এরিয়া কমিটির সদস্য মিলন ভট্টাচার্য বলেন, এটা একেবারেই ভাগবাঁটোয়ারার গন্ডগোল।


মথুরাপুর পঞ্চায়েতের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বিজেপির কৌশিক দাস বলেন, নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি বখরা নিয়ে গন্ডগোল।

কাকদ্বীপে দলের অন্দরে এই বিবাদ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব কীভাবে সামাল দেয়, সেটাই দেখার।


আরও পড়ুন ; খোদ তৃণমূলের প্রধানের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ বিদ্যুৎ দফতরের !