শান্তনু নস্কর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: অবশেষে ধরা পড়ল সুন্দরবনের (Sundarbans) গোসাবার (Gosaba) মথুরাখণ্ড গ্রামে ঢুকে পড়া বাঘ (Tiger)। সোমবার গভীর রাতে পিরখালি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পঞ্চমুখানি নদী সাঁতরে বালি এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মথুরাখণ্ড গ্রামে ঢুকেছিল বাঘটি (South 24 Paraganas)। সেখানে হাবুল দাস নামে এক গ্রামবাসীর গোয়ালে ঢুকে তিনটি ছাগল ও একটি গরু মেরে ফেলে বাঘটি। মঙ্গলবার ভোরে গ্রামের আশপাশে বাঘের পায়ের ছাপ দেখে ও মৃত গরু-ছাগল দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী। ঘটনার খবর জানতে পেরে বন দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে বাঘের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেন। গ্রাম লাগোয়া ম্যানগ্রোভ জঙ্গলে সে সময় বাঘ লুকিয়ে ছিল বলে সিদ্ধান্তে উপনীত হন বনকর্মীরা।


এরপর সেই ম্যানগ্রোভ জঙ্গল টিকে নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। দিনভর বাজি পটকা ফাটানো হয় বাঘকে জঙ্গলে ফেরত পাঠানোর জন্য। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত বাঘ জঙ্গলে ফিরে না যাওয়ায় দুটি খাঁচা পাতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বাঘ ধরার জন্য। অন্যদিকে গ্রামের রাস্তায় আলো জ্বালানো হয়, রাত পাহারার ব্যবস্থা করা হয়, যাতে কোনোভাবেই বাঘটি গ্রামের ভেতরে ঢুকে পড়তে না পারে। অবশেষে বুধবার ভোর ৪.৫৫ মিনিট নাগাদ খাঁচাবন্দি হয় রয়েল বেঙ্গল টাইগার। শেষ পর্যন্ত বাঘ ধরা পড়ায় খুশি বন দফতরের কর্মীরা। সেইসঙ্গে  স্বস্তি পেয়েছেন মথুরাখণ্ড গ্রামের বাসিন্দারা। বাঘটির শারীরিক অবস্থাপ পরীক্ষা নিরীক্ষার পর সেটিকে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে বন দফতরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। বাঘটি সুস্থ থাকলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে বাঘটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে।


 উল্লেখ্য, গত এক মাসে চারবার সুন্দরবনের লোকালয়ে হানা দিয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল। দক্ষিণরায়ের বাহনের দেখা মিলছে কুলতলি (Kultali), মৈপীঠ (Maipith), গোসাবার লাহিড়িপুর (Lahiripur) ও কুমিরমারিতে (Kumirmari)। লোকালয়ে ঘন ঘন ঢুকে পড়ছে বাঘ। আতঙ্ক-উদ্বেগ বাড়ছে সাধারণ মানুষের। এই পরিস্থিতিতে সুন্দরবনের (Sundarban) বাসিন্দাদের সুরক্ষিত রাখতে এবং একইসঙ্গে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের বিচরণেও যাতে সমস্যা না হয় তার জন্য,  সুন্দরবনের ৬২ কিলোমিটার জঙ্গল এলাকা জাল দিয়ে ঘেরার পরিকল্পনা নিয়েছে বন দফতর। দুই ২৪ পরগনায় (South 24 Parganas) এই নেট লাগাতে খরচ হবে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা।