দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ভাঙড়ের হাতিশালায় তৃণমূল আইএসএফ সংঘর্ষের ঘটনায় আরও ২ আইএসএফ কর্মীকে গ্রেফতার করল লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ। সূত্রের খবর, সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে, গতকাল রাতে, কাশীপুর থেকে শেখ ফিরোজ নামে ১ আইএসএফ কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আজ ভোরে লেদার কমপ্লেক্স থানা থেকে আরেক আইএসএফ কর্মী গ্রেফতার হয়। এই নিয়ে, ভাঙড়কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে মোট ৪৬ জন ISF কর্মী-সমর্থককে। 


শনিবার ধর্মতলায় ISF-এর প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ঘিরে অশান্তির ঘটনায়, বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকির ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল ব্যাঙ্কশাল আদালত। পয়লা এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে আরও ১৭ জন ISF কর্মী-সমর্থককে। বিরোধীদের কণ্ঠরোধের চেষ্টার অভিযোগে সরব হয়েছে কংগ্রেস-বিজেপি। গন্ডগোল হলে তো পুলিশ বসে থাকবে না। বলেন কুণাল ঘোষ।


শনিবার ভাঙড়ে অশান্তির জেরে ISF-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা। আহত হন একাধিক পুলিশ কর্তা ও পুলিশ কর্মী! সেই ঘটনায়, ভাঙড়ের বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি-সহ ধৃত ১৮ জন ISF কর্মীকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠাল ব্যাঙ্কশাল আদালত।


শনিবার দলের প্রতিষ্ঠা দিবসকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় আইএসএফ। তারই আঁচ এসে পড়ে ধর্মতলায়। তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের গ্রেফতারির দাবিতে ধর্মতলায় ভাঙড়ের বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকির নেতৃত্বে শুরু হয় অবরোধ। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে শুরু হয়ে যায় খণ্ডযুদ্ধ!  ঘটনায় বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি-সহ মোট ১৯ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে।


তাঁদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, সরকারি কাজে বাধাদান, পুলিশকে মারধর-সহ  একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে লালবাজার। ধৃতদের এদিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করে,১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আর্জি জানান সরকারি আইনজীবী। অন্যদিকে, যে কোনও শর্তে জামিনের আর্জি জানিয়ে, বিস্ফোরক অভিযোগ করেন ধৃতদের আইনজীবী। 


তাঁর দাবি, শনিবার পুলিশ ও শাসকদল একসঙ্গে ISF-এর বিরুদ্ধে নেমেছিল। বিধায়কও ছাড় পাননি। তাঁর হাত মুচকে দেওয়া হয়েছে। গাড়ি ভাঙা হয়েছে। বাইরের লোক ঢোকানো হয়েছিল। এই সবই দল ভাঙানোর চেষ্টা। যেহেতু সামনে পঞ্চায়েত ভোট, তাই এইসব করা হচ্ছে। 


অন্যদিকে সরকারি আইনজীবী দাবি করেন, কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে বেআইনি জমায়েত করা হয়েছিল। লাঠি নিয়ে  আসা হয়েছিল, ইট ছোড়া হয়। বউবাজার থানার ওসি ও অতিরিক্ত ওসিকে খুনের চেষ্টা করা হয়।দু-পক্ষের সওয়াল শোনার পরে বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি-সহ ১৮ জনকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে পাঠান বিচারক। ধৃত এক নাবালককে পাঠানো হয়েছে হোমে। তবে ধৃতদের আবেদন মেনে, তদন্তের স্বার্থে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।


এদিন ভাঙড়ের বিধায়ক-সহ ধৃতদের আদালতে তোলার সময়, তাঁদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখান ISF-এর কর্মী-সমর্থকরা। ধর্মতলায় তুলকালামের ঘটনায় বিরোধী কণ্ঠরোধের চেষ্টার অভিযোগে একসুরে তৃণমূলকে নিশানা করেছে বিজেপি ও কংগ্রেস।


শনিবারের সংঘর্ষের পর, রবিবারও ভাঙড়ে উদ্ধার হল ব্যাগ ও বস্তা ভর্তি বোমা। আরাবুল ইসলামের বাড়ির কাছেই মিলল বোমা। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে তিনজন ISF কর্মীকে। তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অন্যদিকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলেছে ISF।