জয়দীপ হালদার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: দোরগোড়ায় বর্ষা (Monsoon)। দোরগোড়ায় ইলিশের মরসুমও। বাঙালির রসনাতৃপ্তির জন্য মাঝসমুদ্রে পাড়ি জমাতে হয় মৎস্যজীবীদের। সেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে সাগর মোহনায় পাড়ি জমিয়েছে কয়েক হাজার ট্রলার। মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে ১৪ এপ্রিল থেকে ১৫ ই জুন পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকে। বুধবার মধ্যরাত থেকে উঠে গিয়েছে সমুদ্রে মাছ ধরার উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা।


নতুন আশা:
গত কয়েক বছরে কোভিডের (Covid) কারণে বারবার আর্থিক ধাক্কা এসেছে। সেই ধাক্কা কাটিয়ে রুপোলি শস্যের খোঁজে বঙ্গোপসাগরে পাড়ি দিতে তৈরি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্যজীবীরা। কিন্তু সমস্যাও রয়েছে, আকাশ ছুঁয়েছে জ্বালানি তেলের মূল্য। ফলে খরচ বেড়েছে অনেক। সেই খরচের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে ইলিশের (Hilsa) মরসুমেও সব ট্রলার নামতে পারছে না। তাও অনেকে হাল ছাড়েনি। ভাল রোজগারের আশায় চলছে ট্রলারের কাজ। কাকদ্বীপ,নামখানা সহ বিভিন্ন জেটিগুলিতে প্রস্তুতি চলেছে পুরোদমে। ঘাটে-ঘাটে ও ট্রলারে চলছে গঙ্গা পুজো। সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবি শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেন, 'দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে  প্রায় চার হাজার ট্রলার রয়েছে। গত কয়েক বছরে ইলিশ-শিকারে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। সেই কথা মাথায় রেখে এবার সব ট্রলার নামছে না। প্রথম ট্রিপে দেখা হবে ইলিশ শিকারের পরিমাণ। আর তা দেখেই বাকি অর্ধেক ট্রলার সমুদ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রলার মালিকেরা।' তাঁর আশা এবার অন্তত জালে ভাল ইলিশ পড়বে।


কী বলছেন মৎস্যজীবীরা?
ট্রলার মালিক প্রলয় মিশ্র বলেন, 'যেভাবে দিনের-পর-দিন জ্বালানি (Fuel) তেলের দাম বেড়ে চলেছে তাতে ট্রলার ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়েছে। বাকি সব জিনিসেরও দাম অনেক বেড়েছে। দেনা করেও ট্রলার পাঠাচ্ছি।' মাছের আশায় বুক বাঁধছে কয়েক হাজার মৎস্যজীবী। নামখানা ঘাটে সারি সারি ট্রলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এক মাঝি দেবাংশু দাস বলেন, 'প্রয়োজনীয় ডিজেল, বরফ, জাল নিয়ে আমরা প্রস্তুত। ভাল মাছের আশায় রওনা দেব। আশা করছি মাছের জোগান এবারে দিতে পারব।' বিগত কয়েক বছরে ক্ষতি কাটিয়ে মৎস্যজীবীদের মুখে হাসি ফিরবে? উত্তর জানতে অপেক্ষা আরও কয়েকদিনের।


আরও পড়ুন: চারদিন আগে হওয়া দুঃসাহসিক ডাকাতির কিনারা করল পুলিশ, গ্রেফতার ৫