সুন্দরবন: চার দশক আগের বিস্মৃত মরিচঝাঁপি-কাণ্ড (Marichjhanpi) নিয়ে জিগির তুলতে কোনও খামতি রাখছে না বিজেপি (BJP)। পূর্ব ঘোষণা মতোই সোমবার ‘মরিচঝাঁপি চলো’ অভিযানে নামল তারা। বিজেপি-র তফসিলি মোর্চার নেতৃত্বে এই মরিচঝাঁপি অভিযান। মরিচঝাঁপিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর কুমিরমারিতে সভা করবে গেরুয়া শিবির। সোমবার ৪২টি সাংগঠনিক জেলায় মৌন মিছিল করার কথা রয়েছে বিজেপি-র। তাদের অভিযোগ, উদ্বাস্তুদের হত্যার অভিযোগে তদন্ত কমিশন গড়েও বিচার মেলেনি। তাই অভিযানে নামতে হচ্ছে। বিজেপি-র তফসিলি মোর্চার রাজ্য সভাপতি সুদীপ দাস, রাজ্যে দলের সাধার সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পালের মরিচঝাঁপি অভিযানে যোগ দিয়েছেন। হুগলিতে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)।
মতুয়া নেতৃত্বের বিক্ষোভে দলের অস্বস্তি যখন বেড়ে চলেছে, সেই সময় চারদশক আগের মরিচঝাঁপি প্রসঙ্গ কার্যতই খুঁচিয়ে তুলেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যর কথায়, ‘‘মরিচঝাঁপির ঘটনা মানুষ যেন না ভুলে যায়। ছিন্নমূল মানুষকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছিল। ওপার বাংলা থেকে আসা ছিন্নমূল মানুষদের নাগরিকত্ব দেওয়া বিজেপির নীতিগত অবস্থান।’’
কিন্তু ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্তেও সংশোধিত নাগরিত্ব আইন (CAA) কার্.কর করে মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টি যখন ঝুলে রয়েছে, সেই সময় মরিচঝাঁপি প্রসঙ্গ খুঁচিয়ে তোলায় দলের অন্দরেই আপত্তির মুখে পড়তে হচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বকে। দলের বিক্ষুব্ধ নেতা শান্তনু ঠাকুর এই নিয়ে তাঁদের সমালোচনা করেছেন।
আরও পড়ুন: TMC Picnic : বিজেপির পর তৃণমূলেও এবার একের পর এক পিকনিক, বিধায়ক গাইলেন গান
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘বিজেপির প্রশ্রয়ে তৃণমূলের সরকার এসেছে। এতদিন ধরে কী করল?’’ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, বিজেপি দেশেহারা। তাই এ সব করছে তারা। দলের অন্দরে বিদ্রোহ থেকে নজর ঘোরাতেই মরিচঝাঁপি কর্মসূচি বলে অভিযোগ করেন কুণাল।
১৯৭৯ সালে সুন্দরবনের মরিচঝাঁপিতে উদ্বাস্তুদের হত্যার অভিযোগ ওঠে। সেই সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতি বসু। বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তুদের একাংশ দণ্ডকারণ্য হয়ে সুন্দরবনের মরিচঝাঁপি দ্বীপে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাঁদের সরাতে রাজ্যের তরফে পুলিশ পাঠানো হয়। দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধলে পুলিশ গুলি চালায় এবং তাতে বহু উদ্বাস্তুর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে।