সন্দীপ সরকার, কলকাতা: নার্সারির জমিতে মাটি ফেলার কাজের জন্য ২ লক্ষ টাকা তোলা চেয়েছিলেন তৃণমূলের (TMC) পঞ্চায়েত প্রধান। টাকা না দেওয়ায় ফলতায় এক ইঞ্জিনিয়ার ও তাঁর স্ত্রীকে, বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ভাইরাল ভিডিওতে ধরা পড়েছে সেই ভয়ঙ্কর দৃশ্য। তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান অবশ্য এই অভিযোগকে মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিয়েছেন (Engineer Beaten Up)। 


দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas News) ফলতার (Falta News) দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দা কুন্তল মজুমদার পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। সেই সঙ্গে বাড়ির কাছে ৫ বিঘা জমিতে রয়েছে নার্সারি। তাঁর অভিযোগ, গতবছর জমিতে মাটি ফেলার সময় ৫০ হাজার টাকা তোলা চান তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান সনাতন প্রামাণিক। 


মাটি ফেলা ঘিরে অশান্তির অভিযোগ


কুন্তলের দাবি, কোনও রকম টাকা দিতে রাজি হননি তিনি। বরং এ বছর ১৯ মার্চ মাটি ফেলার কাজ শুরু করে দেন। কিন্তু যে দিন কাজ শুরু করেন, সেদিনই দু’জন এসে বলে, এর জন্য ২ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তিনি  টাকা না দেওয়ায়, পরের দিনই হাজির হন স্বয়ং তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান সনাতন প্রামাণিক। কুন্তলের অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান হুমকির সুরে প্রশ্ন করেন, কার অনুমতিতে মাটি ফেলার সাহস দেখিয়েছেন তিনি। স্থানীয় প্রশান বা পঞ্চায়েতের অনুমতি নেননি কেন।


এর পরই মাটিতে ফেলে তাঁকে বাঁশ দিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ কুন্তলের। তিনি জানিয়েছেন, তাঁকে বাঁচাতে এলাকায় তৃণমূলের পার্টি অফিসে ছুটে যান তাঁর স্ত্রী জুলি মজুমদার, যিনি নিজেই কিনা তৃণমূলের শিক্ষা সেলের সদস্য। অভিযোগ, তাঁকেও চুলের মুঠি ধরে ভিতরে টেনে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি তাঁর স্ত্রী। বেধড়ক মারধরে তাঁর শিরদাঁড়ায় চিড় ধরেছে বলে জানা গিয়েছে।


আরও পড়ুন: Howrah: বর্ষায় জল জমার সমস্যা মেটাতে উদ্যোগ, প্লাস্টিক ক্যারি ব্যাগ ব্যবহার রুখতে টাস্কফোর্স গঠন হাওড়ায়


এই ঘটনায় কাঠগড়ায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান ও তাঁর অনুগামীরা। নিগৃহীতদের দাবি, ঘটনার বেশ কিছু ক্ষণ পর পুলিশ এসে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায় তাঁদের। ২৬ তারিখ পর্যন্ত ICU-তে চিকিৎসার পর তাঁরা ছাড়া পান। এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, "এ সব মিথ্যে অভিযোগ। আমি কিছু করিনি। এব্যাপারে কোনও কথা বলব না।"


এখনও গ্রামে ফিরতে পারেননি ওই দম্পতি


মারধরের ঘটনার দিন ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রী ফোন করেছিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জাহাঙ্গির খানকে। তিনি এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। ফোনে বলেন, "আমি এই ঘটনায় অনুতপ্ত। মমতা এই ধরনের ঘটনা মানেন না, অভিষেক মানেন না। এটা মেনে নিতে পারছি না। দল নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে।"


হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও, ঘটনার পর থেকে এখনও পর্যন্ত গ্রামে ফিরতে পারেননি কুন্তল এবং তাঁর স্ত্রী। নার্সারির জন্য যে মাটি তাঁরা এনেছিলেন, সেখানে তৃণমূলের ঝান্ডা পুঁতে দেওয়া হয়েছে। বলে অভিযোগ।