শান্তনু নস্কর ও হিন্দোল দে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা : জয়নগর, আমডাঙা, জগদ্দলের পর এবার গোসাবা। ফের খুন হলেন তৃণমূল নেতা (TMC Leader Murdered)। অভিযোগ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরি করার প্রতিবাদ করায়, গোসাবার তৃণমূলের বুথ সভাপতিকে খুন করা হয়। নিহতের পরিবারের দাবি, নেপথ্য়ে হাত রয়েছে তৃণমূল বিধায়কের অনুগামীদের। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মণ্ডল। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই খুন, অভিযোগ বিজেপির। পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধেই খুনের অভিযোগ তুলেছেন সওকত মোল্লা।  


প্রথমে লাঠি রড দিয়ে বেধড়ক মার। এরপর নদীতে ফেলে দিয়ে ডুবিয়ে নৃশংসভাবে খুনের চেষ্টার অভিযোগ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্য়ু হল গোসাবার তৃণমূলের বুথ সভাপতির। অভিযোগের আঙুল খোদ তৃণমূলের বিধায়কের অনুগামীদের বিরুদ্ধেই। জয়নগর, আমডাঙা, জগদ্দলের পর এবার গোসাবা। এই নিয়ে গত ১৫ দিনে ৪ তৃণমূল নেতা-কর্মী খুন হলেন। নিহত মুছাকলি মোল্লা গোসাবা বিধানসভা কেন্দ্রের রাধানগর-তারানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮৪ নম্বর বুথের সভাপতি ছিলেন। 


গোসাবা ব্লক তৃণমূলের সহ সভাপতি জেলা পরিষদের উপাধ্য়ক্ষ অনিমেষ মণ্ডলের অনুগামী বলে পরিচিত ছিলেন নিহত তৃণমূল মুছাকলি মোল্লা। নিহতের পরিবারের দাবি, রাধানগর এলাকায় পথশ্রী প্রকল্পে, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরির অভিযোগ ওঠায়, সোমবার কয়েকজনকে নিয়ে সেখানে যান তৃণমূল নেতা। প্রত্য়ক্ষদর্শী সূত্রে খবর, রাস্তানির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার বাকিবুর মোল্লার সঙ্গে ব্য়াপক ঝগড়া হয় মুছাকলির। এই বাকিবুর আবার গোসাবার তৃণমূল বিধায়কের ঘনিষ্ঠ বলে শোনা যায়।


প্রত্য়ক্ষদর্শীদের দাবি, এই অশান্তির মধ্য়েই দুপক্ষের তুমুল মারামারি শুরু হয়। লাঠি রড দিয়ে তৃণমূলের বুথ সভাপতিকে বেধড়ক মারধর করে, নদীতে ডুবিয়ে মারার চেষ্টা করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তৃণমূল নেতাকে উদ্ধার করে, প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায়, নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল SSKM-এ। কিন্তু পথেই মৃত্য়ু হয় তৃণমূলের বুথ সভাপতির।


যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মণ্ডল বলেছেন, 'আমার অনুগামী যে বদনাম দিচ্ছে, সেটা সঠিক নয়। পুলিশ দেখুক যারা অন্য়ায় করেছে, তার ব্য়বস্থা করা হোক। এটা যারা বলছে, তারা সঠিক বলছে না। কারণ, মুছাকলি মোল্লা আমাদেরই বুথ সভাপতি। আর যার সঙ্গে গন্ডগোল হয়েছে, সে লোকাল কন্ট্রাক্টর। এ নিজের স্বার্থের জন্য় মারপিট বচসা জড়ায়। রাজনৈতিক গোষ্ঠীকোন্দলের কোনও কারণ নেই।'


এদিকে, গোটা ঘটনায় বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক সওকত মোল্লা বলেছেন, 'যত ভোটের দিন এগিয়ে আসছে, বিজেপির যারা নেতা, তাদের নেতৃত্বে একদম পরিকল্পিতভাবে বেছে বেছে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের খুন করা হচ্ছে। কদিন আগে জয়নগরে আমাদের দলীয় নেতা খুন হয়েছে। আবার গোসাবাতে আমাদের এক দলীয় নেতাকে পরিকল্পিতভাবে বিজেপি আশ্রিত সমাজবিরোধীরা খুন করেছে।' যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের অর্ন্তদ্বন্দ্বের জেরেই ঘাসফুল শিবিরের নেতা খুন হয়েছেন বলে পাল্টা অভিযোগ বিজেপির। এদিকে, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে সুন্দরবন উপকূল থানা।


 


আরও পড়ুন- কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বঞ্চিতদের টাকা পাঠাল তৃণমূল, অভিষেকের উদ্যোগকে 'ঘুষ' কটাক্ষ বিজেপির


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।