গৌতম মণ্ডল, কাকদ্বীপ: বর্ষার মরশুম মানেই পাতে ইলিশ পড়া যাই। বাজারের থলে হাতে, রুপোলি আঁশের মাছের খোঁজে এই সময় সকাল থেকেই ঢুঁ মারেন ক্রেতারা। কিন্তু এবছর বর্ষা যেমন গড়িমসি করছে, বাজারে ইলিশের অবস্থাও তেমনই। একহাত সমান ঝকঝকে ইলিশের বদলে ছোট আকারের খোকা ইলিশে ছেয়ে গিয়েছে বাজার। বাড়তে না দিয়ে, বেআইনি ভাবে দেদার ছোট ইলিশ ধরা হচ্ছে বলে অভিযোগ (Hilsa Fish)।
এক সপ্তাহ আগে থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে ইলিশ ধরার মরসুম। কিন্তু মরশুমের শুরুতেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas News) বিস্তীর্ণ এলাকা ছেয়ে গিয়েছে খোকা ইলিশে। ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জের বাজার এমনকি মাছের আড়তেও দেদার বিকোচ্ছে ছোট আকারের খোকা ইলিশ। এই ইলিশ মাছের এক একটির ওজন ৫০ গ্রামেরও কম। এত কম ওজনের মাছ ধরা আইনত অপরাধ বলে গন্য হয়।
ডায়মন্ড হারবাের নগেন্দ্রবাজারের মাছের আড়ত থেকে কাকদ্বীপের বাজার, গেলেই চারিদিকে চোখে পড়ছে খোকা ইলিশ। সরকারি নিয়ম অনুসারে, ৫০০ গ্রামের কম ওজনের ইলিশ মাছ ধরা এবং বাজারে বিক্রি করা আইনত অপরাধ। সেই নিয়ে বছরভর রাজ্য সরকারের মৎস্য দফতরের তরফ থেকে ব্যাপক প্রচারও চালানো হয়। কিন্তু সেই প্রচারই সার, বিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে রীতিমতো খোকা ইলিশ ধরা এবং বিক্রি চলছে বাজারে।
আরও পড়ুন: Sayani Ghosh: সায়নীকে নিয়ে ফেসবুকে কুরুচিকর মন্তব্য, গলসিতে গ্রেফতার বিজেপি প্রার্থী
স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর এভাবেই সরকারি নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে খোকা ইলিশ ধরার রেওয়াজ চলছে। একশ্রেণির ট্রলার মালিক প্রকাশ্যে এই বেআইনি কাজ করে চলেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। প্রচার, নিষেধাজ্ঞা কোনও কিছুই তাঁদের দমাতে পারে না বলে অভিযোগ। যথারীতি এ বারও বাজার ছেয়ে গিয়েছে খোকা ইলিশে। দাম তুলনামূলক কম বলে লোকজনও দেদার তা কিনছেন বলে অভিযোগ।
খোকা ইলিশে বাজার ছেয়ে যাওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে মৎস্য দফতর। কাকদ্বীপ, নামখানা মৎস্য বন্দরে চলছে মাইকিং করে প্রচার। মৎস্যজীবী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে এই উদ্য়োগ। সামুদ্রিক মৎস্যজীবী ইউনিয়নের নেতৃত্ব বিজন মাইতি, সতীনাথ পাত্র মৎস্যজীবীদের ছোট ইলিশ না ধরার আবেদন জানিয়েছেন। জেলার সহ-মৎস্য অধিকর্তা ( সামুদ্রিক) পিয়াল সর্দারও ছোট ইলিশ ধরার অভিযোগ এবং তার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমরা প্রচার করছি। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আমরা তল্লাশি চালাব। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"