শান্তনু নস্কর, সুন্দরবন: সুন্দরবনের বাঘের পর এবার কচ্ছপের শরীরে বসানো হল ট্রান্সমিটার (Transmitter)। কচ্ছপের (Turtle) গতিবিধি লক্ষ্য করার জন্য বসানো হল এই ট্রান্সমিটার। বাটাগুড় বাসকা নামে এক বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির কচ্ছপের শরীরে বসানো হয়েছে। ট্রান্সমিটার বসিয়ে কচ্ছপগুলিকে সুন্দবনের (Sundarban) নদী ও খাঁড়িতে ছাড়া হয়েছে। ট্রান্সমিটারের সাহায্যে কচ্ছপের গতিবিধি ও বংশবিস্তারের ওপর নজর রাখা হবে। পরিবেশের সঙ্গে এরা কীভাবে সামঞ্জস্য রক্ষা করে তাও জানা যাবে। দশটি কচ্ছপের শরীরে এই জিপিএস ট্রান্সমিটার বসানো হয়েছে।
বন দফতর সূত্রে খবর, একসময় সুন্দরবন থেকে শুরু করে মায়নমার, থাইল্যান্ড হয়ে মালয়েশিয়া উপকূল পর্যন্ত এই বিশেষ ধরনের কচ্ছপের বসতি ছিল। কিন্তু বর্তমানে এই প্রজাতির কচ্ছপ বিলুপ্ত হয়ে যেতে বসেছে। ১৯৯৫-৯৬ সালে বন দফতরের তরফ থেকে সমুদ্র তীর থেকে অলিভ রিডলে বা সামুদ্রিক কাঠা প্রজাতির কচ্ছপের ডিম সংগ্রহ করে তা ফোটানো হয়। কিন্তু সেই নবজাতক কচ্ছপগুলির মধ্যে বাটাগুড় বাসকা প্রজাতির কচ্ছপের সন্ধান পায় বন দফতর। সেই থেকেই এই বাটাগুড় বাসকা প্রজাতির কচ্ছপের সংরক্ষণ শুরু করে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। সুন্দরবনের সজনেখালিতে আলাদা একটি পুকুর তৈরি করে সেখানেই বেশ কিছু বছর ধরে এই কচ্ছপ সংরক্ষণ ও তার প্রজনন করে চলেছে ব্যাঘ্র প্রকল্প। মাত্র ১২টি কচ্ছপ থেকে বংশবৃদ্ধি হয়ে বর্তমানে ৩৭০ টি বাটাগুড় বাসকা প্রজাতির কচ্ছপ রয়েছে ব্যঘ্র প্রকল্পের কাছে। তবে বংশবৃদ্ধি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বর্তমানে সজনেখালির পাশাপাশি দোবাঁকি, খাটোয়াঝুড়ি ও হরিখালিতে এদের সংরক্ষণ ও প্রজননের ব্যাবস্থা করেছে বন দফতর।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, প্রজননে সক্ষম এইরকম বেশ কিছু বাটাগুড় বাসকা প্রজাতির দশটা কচ্ছপকে সুন্দরবনের নদীতে এদিন ছাড়া হল। যার মধ্যে ৭ টি স্ত্রী ও ৩ টি পুরুষ কচ্ছপ রয়েছে। এদের গতি প্রকৃতির উপর নজরদারি চালাতে দশটি কচ্ছপের শরীরেই জিপিএস ট্রান্সমিটার বসানো হয়েছে। এরফলে বিলুপ্ত প্রায় এই প্রজাতির কচ্ছপ সম্পর্কে আরও অনেক তথ্য জানা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: South 24 Parganas News : সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হলেও নেই হঁশ, বারুইপুরে ধরপাকড় পুলিশের