শান্তনু নস্কর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা : আকাশ জুড়ে মেঘের ঘনঘটা। তার নিচে নদীর বুক জুড়ে যেন খুশির ঝিলিক। গোসাবা বিডিও ঘাটের জেটি তখন নাচের তালে আর ছন্দে মুখর। মাথায় মেঘ নিয়ে ভরা নদীর জল ঠেলে তীরে ভিড়ল এমভি কুঞ্জা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকায় সরকারি উদ্যোগে চালু হল প্রথম ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স (Water Ambulance)। নদীপথে হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া আরও সহজ করতে সরকারি উদ্যোগে ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা চালু হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবায়। সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা আজ তার অনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। জল-জঙ্গলের মধ্যেই যাঁদের জীবন আবর্তিত হয়, সেই সুন্দরবনের বাসিন্দারা নতুন পরিষেবায় খুশি এবং স্বস্তিতে।


উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনির মধ্যে ফিতে কেটে উদ্বোধন হল যে পরিষেবার। সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা বলেছেন, 'দীর্ঘদিনের সমস্যা। গোসাবা মূলত দ্বীপঅঞ্চল। নদীপথে যাতায়াত। এক দ্বীপ থেকে আরেক দ্বীপে যেতে নদীপথই ভরসা। সেকথা চিন্তা করেই ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্স। মুখ্যমন্ত্রীও ওয়াটার অ্যাম্বুল্যান্সের কথা বলেছিলেন। মানুষের সুবিধার্থে আজ চালু হল।'


ক্যানিং মহকুমার অন্তর্গত গোসাবা ব্লক মূলত ৯টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। সুন্দরবনের গভীর বনভূমি শুরু হওয়ার আগে গোসাবা হল শেষ জনপদ এলাকা।
বিদ্যাধরী, রায়মঙ্গল, গোমর, দুর্গাদোয়ানির মতো অসংখ্য নদী আর খালবিলে পরিপূর্ণ গোসাবার নটি ব্লক। দিনে হোক বা রাতবিরেতে রোগী নিয়ে এক দ্বীপ থেকে আরেক দ্বীপে পৌঁছতে জলপথই এখানে একমাত্র ভরসা। গভীর রাতে প্রসব যন্ত্রণা উঠলে বা কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে সমস্যায় পড়েন গ্রামবাসীরা। নৌকা পেলেও, তাতে রোগী নিয়ে যেতে অনেক সময় লেগে যায়। সেই জায়গাতেই ভরসা জোগাচ্ছে ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স। যে পরিষেবা শুরু হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই খুশি গোসাবার বাসিন্দারা। আপাতত একটি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স দিয়েই শুরু হল পরিষেবা।


আরও পড়ুন-


সুন্দরবনে মৎস্যজীবীকে বাঘের মুখ থেকে বাঁচিয়ে আনলেন সঙ্গীরা


সুন্দরবনের জন্য দিঘা-সুন্দরবন মাস্টার প্ল্যান করা হবে, নবান্নে ঘোষণা মমতার