সুনীত হালদার, হাওড়া: বনধের (Adivasi Calls Bandh) জেরে ফের ধাক্কা খেল ট্রেন (Indian Railways) চলাচল। এবার বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে ঝাড়খন্ড (Jharkhand) বনধের ডাক দিয়েছেন আদিবাসীরা যার আঁচ পড়েছে দক্ষিণ পূর্ব রেলের (South Eastern Railways) ট্রেন চলাচলে। বিক্ষোভের জেরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়গপুর টাটা সেকশনের আপ ও ডাউন লাইনের ট্রেন পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে বলে দক্ষিণ পূর্ব রেলের তরফে।


কী ঘটছে?
দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য কুমার চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার সকাল ন'টা নাগাদ বিক্ষোভকারীরা চুরুগুন্ডা স্টেশনের রেল ট্র্যাকের উপরে বসে পড়লে পরিষেবা ব্যাহত হয়। ফলে সকালে হাওড়া থেকে ছেড়ে যাওয়া ইস্পাত এক্সপ্রেস ঘাটশিলায়, হাওড়া-মুম্বই দুরন্ত এক্সপ্রেস খড়গপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় আরপিএফ এবং জিআরপি। বনধ সমর্থকদের দ্রুত ট্র্যাক থেকে সরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে তাঁরা এই ট্র্যাক থেকে তাড়াতাড়ি না সরলে, এই সেকশনের ট্রেন চলাচল আরও ব্যাহত হতে পারে। এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে তাতে,


ডাউন গোরখপুর শালিমার এক্সপ্রেস
ডাউন ওখা শালিমার এক্সপ্রেস
ডাউন মুম্বই হাওড়া মেল
ডাউন পুনে হাওড়া আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেস
ডাউন এলটিটি শালিমার এক্সপ্রেস
ডাউন আহমেদাবাদ হাওড়া এক্সপ্রেস
ডাউন মুম্বই হাওড়া গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস 


ট্রেনগুলি চিত্রগুড়া স্টেশনে আটকে পড়েছে। এদিনের ঘটনা অনেকের মনেই কুড়মি আন্দোলনের জেরে ট্রেন পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার স্মৃতি ফিরিয়ে আনে। 


কুড়মি আন্দোলনে রেল পরিষেবায় ধাক্কার স্মৃতি...
গত এপ্রিলের ঘটনা। সে বার দাবিপূরণ না হওয়া পর্যন্ত রেল-সড়ক অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা তাঁরা। পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে আদিবাসী কুড়মিদের সেই আন্দোলনের জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ট্রেন চলাচল। বাতিল করা হয় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন। কয়েকটি ট্রেনের যাত্রাপথও কাঁটছাট করা হয়। এমন হঠাৎ পরিবর্তনের ফলে তুমুল ভোগান্তিতে পড়তে হয় হাজার হাজার ট্রেনযাত্রীকে। খেমাশুলিতে টানা ৪ দিন ধরে অবরুদ্ধ থাকে রেল ও জাতীয় সড়ক। এক ছবি উঠে আসে পুরুলিয়ার কুস্তাউরেও। লাগাতার রেল অবরোধ চলে সেখানেও। টানা চার দিনের সেই অবরোধের পর ভারতীয় রেলের তরফে যে পরিসংখ্য়ান উঠে আসে, তাতে দেখা গিয়েছিল ওই সময়ের মধ্যে অন্তত ১৭৯টি ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে। একের পর এক ট্রেনের যাত্রাপথও বদলাতে হয়েছে। এতেই শেষ নয়। কুড়মিদের আন্দোলনের জেরে পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কও অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। কুড়মিদের দাবিদাওয়ার মধ্যে অন্যতম ছিল, তাঁদের তফশিলি উপজাতিভুক্তদের আওতায় আনতে হবে। সারনা ধর্মের স্বীকৃতি দিতে হবে। কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফশিলের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এমনই একাধিক দাবিতে বনধ শুরু করেন তাঁরা যার ধাক্কায় টালমাটাল হয়ে পড়েছিল রেল পরিষেবা। স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরতে অনেকটা সময় লেগে যায়।


কী হবে এবার? অপেক্ষায় রেল, ট্রেনযাত্রীরা।


আরও পড়ুন:রাজ্যপাল ফিরতেই বাসন্তীতে ফের গুলি, পঞ্চায়েত ভোটের আগে দুষ্কৃতী তাণ্ডবে ঘুম উড়ছে এলাকাবাসীর