হাওড়া: আচমকা নবান্নে (Nabanna) হাজির হয়ে চমকে দিয়েছিলেন সকলকে। শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee) তৃণমূলে ফিরছেন কিনা, শুরু হয়েছিল জল্পনা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে সাক্ষাৎ সেরে বেরিয়ে এ বার সেই জল্পনায় একপ্রকার সিলমোহর দিতে দেখা গেল শোভন এবং তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Baishakhi Banerjee)। 'দিদি যবে বলবেন, শোভন কাজে যোগ দেবেন' বলে মন্তব্য করলেন বৈশাখী। শোভনও জানিয়েছেন, মমতার নির্দেশ পালন করাই বরাবর কর্তব্য বলে মনে করে এসেছেন তিনি।
শোভনের তৃণমূলে ফেরা ঘিরে জল্পনা
বুধবার দুপুর সওয়া ৩টে নাগাদ আচমকা নবান্নে হাজির হন শোভন এবং বৈশাখী। ভিআইপি প্রবেশদ্বার দিয়ে ঢুকে সোজা ১৪ তলায় চলে যান। সেখানে মমতার সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলেন তাঁরা। প্রায় এক ঘণ্টা পর নবান্ন থেকে নেমে আসেন তাঁরা। সেই সময় সংবাদমাধ্যম ছেঁকে ধরে তাঁদের। শোভন কি তাহলে তৃণমূলে ফিরছেন! উড়ে আসে প্রশ্ন।
তবে প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার বদলে হাসিমুখেই জবাব দেন শোভন। বলেন, "ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে হলে আমার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গা থেকে। কিন্তু ছোট থেকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে মমতাদির চিন্তা-ভাবনা, মমতাদির কথা, তাঁর ইচ্ছা বাস্তবায়িত করাকেই কর্তব্য বলে মনে করেছি আমি। আমার রাজনৈতিক জীবন এবং অন্য সবকিছুই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রিক।"
প্রথমে কলকাতা পুরসভার মেয়র পদ থেকে ইস্তফা, তার পর বিজেপি-তে যোগদান এবং ফের তৃণমূলের কাছাকাছি, আচমকা এই পরিবর্তন কেন! রাজনীতির মূলস্রোতে ফিরতেই কি তাহলে মমতার দ্বারস্থ শোভন! প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "মমতাদির কাছে আসব, একটু চা খাব, গল্প করব, মতামত বিনিময় হবে, নির্দেশ, আদেশ, অনুরোধ থাকবে, এমন হওয়াটাই তো বাঞ্ছনীয়!" তাহলে কি ফের সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যাবে তাঁকে! শোভনের জবাব, "সক্রিয়-নিস্ক্রিয়, এ সব নিয়ে আপনাদের এবং আমার ধারণা আলাদা।"
গত বিগত চার বছর ধরে ব্যক্তিগত থেকে রাজনৈতিক, শোভনের জীবনের সব ক্ষেত্রেই সর্ব ক্ষণের সঙ্গী হয়ে থেকেছেন বৈশাখী। এ দিন নবান্নেও শোভনের পাশেই ছিলেন তিনি। যদিও তাঁর সঙ্গে শোভনের ঘনিষ্ঠতা এবং তা নিয়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্টের বিষয়টি নিয়ে শুরু থেকেই মমতা আপত্তি জানিয়েছিলেন বলে জানা যায়। কিন্তু বৈশাখীর দাবি, অভইমান তৈরি হয়েছিল বটে। কিন্তু এ দিন সব অভিমানের প্রাচীর ভেঙে গিয়েছে। মমতার মন জুড়ে এখনও মমতা এবং মমতাও এখনও শোভনকে ভাইয়ের মতোই ভালবাসেন বলেও মন্তব্য করেন বৈশাখী। শোভনকে তিনি দ্রুত কাজে ফিরতে দেখতে চান বলেও জানান।
মমতা বললেই কাজে যোগ দেবেন শোভন!
শোভনের তৃণমূলে ফেরা নিয়ে যদিও কোনও রাখঢাক করেননি বৈশাখী। তাঁর কথায়, "মমতাদির সঙ্গে চিরকালের সম্পর্ক শোভনের। মাঝে অভিমানের প্রাচীর তৈরি হয়েছিল। সেটি ভেঙে গিয়েছে। আজ আবার আগের শোভনকে পেলাম। ওর প্রতি দিদির স্নেহ আগেও দেখেছি, মন থেকে কোনও দিন দূর করতে পারেননি। শোভনের মন জুড়েও দিদি। দিদি যবে বলবেন, ও কাজে যোগ দেবে।"
শোভন বিজেপি থেকে বেরিয়ে আসার পর অনেকে শওভনের রাজনৈতিক জীবনের সমাপ্তি আখ্যান লিখে ফেলেছিলেন বলেও দাবি করেন বৈশাখী। তাঁর দাবি, রাজনীতিকে এখনও অনেক কিছু দেওয়ার আছে শোভনের।