হিন্দোল দে, কলকাতা: 'এ ডর মুঝে আচ্ছা লাগা' ! তৃণমূলে ফেরার জল্পনার মধ্যে স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে এই ভাষাতেই জবাব দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। বললেন, 'মৃত্যুর পরেও ওই ঠিকানায় পৌঁছবে না দেহ।' রত্না চট্টোপাধ্য়ায় আমার জীবনে অস্তিত্বহীন। শোভনের 'বিচ্যুতিতে' বৈশাখীকে কটাক্ষ করায়, রত্নাকে জবাব দিয়েছেন বৈশাখী বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ও।


লোকসভা ভোটের আগেই কি ঘর ওয়াপসি? ২৪-এর মহারণের আগেই কি ঘাসফুলের আনন উজ্জ্বল করবেন কানন?বৃহস্পতিবার শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষের যাওয়া, খাওয়াদাওয়া ও আড্ডা ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে জোরালো হয়েছে এই জল্পনা। আর এই জল্পনার মধ্যেই শুক্রবার মুখ খোলেন শোভনপত্নী রত্না চট্টোপাধ্যায়। বেহালা পূর্ব তৃণমূল বিধায়ক শোভনপত্নী রত্না চট্টোপাধ্যায় বলেন, দেখুন উনি একট সময় পলিটিক্স করতেন, আমার যখন বিয়ে হয় তখন উনি কাউন্সিলর ছিলেন। হঠাৎ করে মাঝখানে শোভনবাবুর একটা বিচ্যুতি ঘটল। তিনিও সরে গেলেন পলিটিক্স থেকে... প্রায় ৭-৮ বছর ধরে পলিটিক্সে নেই। দল যদি এখন মনে করে যে শোভনবাবুকে প্রয়োজন আছে,দল নেবে, সেখানে আমার কিছু বলার নেই।এদিন স্ত্রীকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন শোভন।


প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্য়ায় বলেছেন, রত্না দেবীর অস্তিত্ব আমার কাছে অস্তিত্বহীন। রত্না দেবী সম্বন্ধে আমি কোন আলোচনাই করতে চাই না। তৃণমূল কংগ্রেস আমার শিরায় ধমনীতে প্রায় ৪৫ বছর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক । যে স্নেহ ভালবাসা বিশ্বাস আস্থা আমাদের মধ্যে পরস্পরের আছে। সেখান থেকে আমার কোন বিচ্যুতি ঘটেছে বলে আমি বিশ্বাস করি না এবং আমার কোন জায়গাতে তার প্রভাব নেই।  শুধু তাই নয়, শোভনের 'বিচ্যুতিতে' বৈশাখীকে কটাক্ষ করেন রত্না।এদিন কটাক্ষের পাল্টা জবাব এসেছে শোভন-বৈশাখী- দুই তরফেই। 


শোভন চট্টোপাধ্য়ায় বলেন, এ ডর মুঝে আচ্ছা লাগা। উনি বৈশাখী বন্দোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে বিচ্যুতির কথা বলছেন আমি বলব যে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে শিক্ষা যে শিক্ষাগত যোগ্যতা আছে সমাজিক অবস্থান সমস্ত কিছুতেই আমি মনে করি রত্না চট্টোপাধ্যায় তার পায়ের নখের যোগ্যও নয়। কোন বিচ্যুতি হয়নি। শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, কার জন্য বিচ্যুতি হয়েছে সেটা আমি জানি না, কিন্তু কার সমস্যা হচ্ছে, সেটা সারা বাংলার মানুষ বুঝছে।আমাকে অত নম্বর দেওয়ার ওনার কোন প্রয়োজন নেই শোভনের কাছে আমি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেটা ব্যক্তিগত জায়গায়।
 
২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে বেহালা পূর্ব কেন্দ্র থেকে ২৪ হাজার ২৯৪ ভোটের ব্য়বধানে জয়ী হন শোভন চট্টোপাধ্য়ায়।কিন্তু, লোকসভা ভোটের পরই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। ২০২১ সালে শোভনের কেন্দ্র বেহালা পূর্ব থেকেই জয়লাভ করেন রত্না চট্টোপাধ্যায়।অন্যদিকে, বিধানসভা ভোটের প্রার্থীপদ নিয়ে অসন্তোষের জেরে বিজেপি ছাড়েন শোভন চট্টোপাধ্যায়।


আরও পড়ুন, ব্রিগেডের সাফল্য কামনা করে বার্তা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর


এবার শুরু তৃণমূলে ফেরার জল্পনা। তাহলে কি আগামী দিনে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের কাছে ফিরে যেতে পারেন শোভন?শোভন চট্টোপাধ্য়ায় বলেন, সে গুড়ে বালি। মৃত্যুর পরেও আর কোনদিন ওই ঠিকানায় পৌঁছবে না আর রত্না দেবীর আমার জীবনের কোন অস্তিত্ব নেই। আর সেই অস্তিত্বে আসার যদি স্বপ্ন দেখে থাকেন সেটা স্বপ্নই থেকে যাবে। কারণ আমি বুঝিনি যে ঘরে একটা কালসাপ পুষে রেখেছি।বিজেপিতে যাওয়া ব্লান্ডার ছিল বলে মন্তব্য করে বৃহস্পতিবার শোভন জানান, তিনি তৃণমূলেরই লোক। তাহলে কি ঘর ওয়াপসি শুধু সময়ের অপেক্ষা।সময়ই দেবে তার উত্তর।