কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একবছরেরও বেশি সময় ধরে জেলবন্দি তিনি। যত সময় এগিয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে তৃণমূলের (TMC)। ইদানীং কালে আর সেভাবে তাঁর নামও মুখে আনতে দেখা যায় না জোড়াফুল শিবিরের নেতা-নেত্রীদের। সেই আবহেই এবার লকআপে পার্থের সঙ্গে দেখা করলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovan Chatterjee), এই মুহূর্তে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছেন যিনি নিজেও।


শনিবার আলিপুর আদালতে নিজের কাজে এসেছিলেন শোভন। সেখানে তিনি জানতে পারেন, পার্থ সেখানেই আছেন। এর পরই লকআপে পার্থের সঙ্গে গিয়ে দেখা করেন তিনি। খোঁজ নেন শরীর-স্বাস্থ্যের। এই সাক্ষাৎ নিয়ে প্রশ্ন করলে শোভন বলেন, "দূর থেকে দেখা হয়েছে। স্বাস্থ্য নিয়ে খোঁজ নিয়েছি।" দূর থেকেই কথা হয় বলে জানিয়েছেন শোভন।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আলিপুর আদালতে এদিন অন্য কাজে এসেছিলেন শোভন। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন পার্থও রয়েছেন সেখানে। এর পর দেখা করতে যান তিনি। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে শোভন জানান, দূর থেকেই পার্থকে দেখেন তিনি। শারীরিক অবস্থা কেমন জানতে চান। দীর্ঘদিনের সঙ্গী, একসঙ্গে কাজ করেছেন পাশাপাশি। তাই দেখা করলেন, শরীরের খোঁজ নিলেন বলে জানান শোভন।


আরও পড়ুন: ‘পাঁচ বছর অন্তর রাখি হয় বুঝি’! গ্যাসের দাম নিয়ে খোঁচা বিজেপি-কে, ধূপগুড়িতে আক্রমণে অভিষেক


পার্থর সঙ্গে দেখা করে এদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন শোভন। তবে পার্থর সঙ্গে দেখা করার বিষয়টি নিয়ে কোনও জলঘোলা করতে নারাজ তিনি। নেহাত সৌজন্য সাক্ষাৎ বলেই এই সাক্ষাৎপর্বকে ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। পার্থ বা তাঁর আইনজীবীও এ নিয়ে বিশেষ কোনও মন্তব্য করেনি। তবে বাংলার রাজনীতিতে একসময়কার দাপুটে দুই রাজনীতিক, ঘটনাচক্রে আজ যাঁরা পিছনের সারিতে, তাঁদের এই সাক্ষাৎ নিয়ে কৌতূহল দেখান ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন।


পার্থ এবং শোভন, তৃণমূলে একসময় মমতার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন দু'জনই। কিন্তু দু'জনই এখন তৃণমূল থেকে অনেক দূরে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ানোর পর থেকে পার্থের নামও মুখে আনতে নারাজ তৃণমূল। অন্য দিকে, বিজেপি থেকে আবারও তৃণমূলে ফেরার চেষ্টা করেছিলেন শোভন। তবে এখনও সেই চেষ্টায় তেমন সফল হননি তিনি। বরং নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর পার্থকে নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন শোভনের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। 'পার্থের মধ্যে নিজেকে জাহির করার প্রবণতা ছিল', 'মমতার প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব ছিল পার্থের', এমন মন্তব্য করতে শোনা যায় বৈশাখীকে।