সমীরণ পাল, উত্তর চব্বিশ পরগনা : দুর্নীতি ইস্যুতে বিদ্ধ তৃণমূল। ইডি , সিবিআই এর নজরে একের পর এক শাসক দলের নেতা। রাজ্যে একাধিক জায়গা থেকে উদ্ধার হচ্ছে হিসেব বহির্ভূত কোটি কোটি টাকা। স্বাভাবিক ভাবেই বিরোধীপক্ষ থেকে উড়ে আসছে আক্রমণের বাণ। এরই মধ্যে অস্বস্তি বাড়ালেন তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। যিনি  সঙ্গে আছেন তৃণমূলের আঁতুড়ঘর থেকে। 


বিস্ফোরক শোভনদেব
দুর্নীতি ইস্যুতে  বিস্ফোরক মন্তব্য করতে শোনা গেল শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে। একটি অনুষ্ঠানেবক্তব্য রাখার সেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। রবিবার নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে দলীয় অনুষ্ঠানে শোভনদেব বলেন, আমাকে ব্যবহার করে কেউ তার নিজের সম্পদ বাড়াক, এটা চাই না ! 


'কে দিচ্ছে টাকা?'
কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ' ভোট দেবেন আপনারা, আর খেয়াল রাখবেন না আমি কেমন আছি? আমার কিছু ছিল না, হঠাৎ দেখা গেল অনেক কিছু হয়ে গেল! বাসের কনডাক্টর থেকে দেখা গেল যে, ৫০ বিঘার জমির মালিক হয়ে গেলাম আমি! এটা হয়? কোথা থেকে আসবে? কে দিচ্ছে টাকা? ' রবিবার ঘোলার মহিষপোতায় দলীয় অনুষ্ঠানে দুর্নীতি ইস্যুতে প্রশ্ন তোলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় শুরু হয়েছে বিতর্ক। 

উনি ব্যতিক্রমী : শমীক 
এই ভিডিও দেখে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ' শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলের মতো দলে ব্যতিক্রমী চরিত্র। তিনি এখনও ওই দলে কীভাবে আছেন জানি না। উনি ব্যতিক্রমী বলেই, লাভজনক মন্ত্রিত্ব হারাতে হয়েছে। '

'হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটটা হরিশ ব্যানার্জি স্ট্রিট হয়ে গেল'
শোভনদেবের বক্তব্য শুনে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ' শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় আগাগোড়া রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। মতের মিল না থাকলেও ওঁকে আমরা বরাবরই দেখে আসছি, অন্যরকম মানুষ। ' তৃণমূলকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটটা হরিশ ব্যানার্জি স্ট্রিট হয়ে গেল, ৩৫ টা প্লট ওদের, কীভাবে হচ্ছে এসব ? 


 কিছুদিন আগে দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন তাপস রায়। বর্তমান ছাত্রনেতাদের আচরণ নিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন বরানগরের তৃণমূল বিধায়কের। ভাইরাল হয় ভিডিও। নিজের বিধানসভায় শিক্ষকদের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে তাপস রায় বলেন, ' আমি যখন দোর্দণ্ডপ্রতাপ প্রভাবশালী ছাত্রনেতা তখন কলেজের অনুষ্ঠানে ব্লেজার পরতে না চাওয়ায়, অধ্যক্ষ চড় মেরেছিলেন। আজকে এমনটা হলে অধ্যক্ষ চড় মারবেন তারপর বাড়ি ফিরে যাবেন, ভাবা যায়! ' কার্যত দলের ছাত্রনেতাদের দিকেই ইঙ্গিত তৃণমূল বিধায়কের। সামাজিক অবক্ষয়ের কথা বলতে গিয়ে বিধায়কের মন্তব্য, সমাজকর্মী, রাজনৈতিক কর্মী, শিক্ষক, ছাত্ররা এই অবক্ষয়ের শিকার হলে দেশ এবং সমাজের সর্বনাশ। 

এভাবে দলের বর্ষীয়ান নেতাদের গলাতেই ভিন্ন সুরে কিছুটা হলে ও অস্বস্তিতে তৃণমূল, ধারণা রাজনৈতিক মহলের।