কলকাতা: বুক বাজিয়ে নিজেকে তৃণমূল বলে পরিচয় দিয়েছেন। অভিষেক বন্দ্যোাপাধ্যায় তাঁর কাছে 'সাহেব'। এ হেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujay Krishna Bhadra) ওরফে 'কালীঘাটের কাকু'র (Kalighater Kaku) গ্রেফতারিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। নিয়োগ দুর্নীতিতে তিনি যদি কান হন, তাহলে 'মাথা'ও শীঘ্র নাগালে চলে আসবে বলে মত তৃণমূল বিরোধী শিবিরের। সেই আবহেই ধৃত সুজয়কৃষ্ণের পরিবারের অন্য রাজনৈতিক সংযোগ সামনে এল। তৃণমূল নয় (TMC), বরং আগাগোড়া তাঁর পরিবার গেরুয়াপন্থী (RSS) ছিলেন বলে দাবি করেছেন সুজয়কৃষ্ণের দাদা (SSC Case)। 


দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার রাতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হাতে গ্রেফতার হন সুজয়কৃষ্ণ। তার পর গতকাল রাত থেকেই তৃণমূল নেতৃত্ব বিশেষ করে অভিষেককে তুলোধনা করছেন বিরোধী শিবিরের রাজনীতিকরা। এমন পরিস্থিতিতে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুললেন সুজয়কৃষ্ণের দাদা অজয়কৃষ্ণ। জানালেন, ভাই অধুনা তৃণমূল হয়েছিলেন বটে, কিন্তু তাঁদের পরিবার আগাগোড়াই গেরুয়াপন্থী ছিল। বেশ কয়েক প্রজন্ম বিজেপি-র অভিভাবক সংস্থা রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সঙ্ঘের (RSS) সক্রিয় কর্মী ছিল, এমনকি সুজয়কৃষ্ণ নিজেও সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন অজয়কৃষ্ণ। 


বুধবার এবিপি আনন্দের মুখোমুখি হন অজয়কৃষ্ণ। অন্যায় করে থাকলে ভাইয়ের সাজা হোক, আর অন্যায় না করে থাকলে, সসম্মানে ফিরে আসুন বলে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তৃণমূলের সঙ্গে সুজয়কৃষ্ণের ওঠাবসার প্রসঙ্গ উঠতে জানিয়ে দেন, তাঁরা আদতে সঙ্ঘ করে এসেছেন বরাবর। এদিন অজয় বলেন, "আমি জন্মে থেকে RSS করেছি। আমার বড়দিও...সুজয়ও বহু দিন RSS করেছে। হয়ত ততটা সক্রিয় ছিল না। RSS তো রাজনৈতিক দল নয়। পরে তৃণমূল করে।" 


আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: ‘পারলে কাকুকে বাঁচান’, অভিষেককে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন শুভেন্দু


এমনকি তাঁদের বড় দাদা অমরকৃষ্ণ আজও RSS করেন বলে জানান অজয়কৃষ্ণ। তিনি জানান, এখন যে ফ্ল্যাট তাঁদের, সেখানে আগে পৈতৃক ভিটে ছিল। ভাইয়ে ভাইয়ে যাতে ঝগড়া না হয়, তাই মা বেঁচে থাকতে থাকতেই প্রোমটিংয়ে দিয়ে দেন। তাতে প্রত্যেক ভাই একটি করে ফ্ল্যাট পান। ফ্ল্যাট ভাগে পড়ে অমরকৃষ্ণেরও। পরে সেই ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি করে তিনি সুজয়কৃষ্ণকে দিয়ে দেন। অজয় বলেন, "টাকার বিনিময়ে হোক না টাকা না দিয়ে, দাদা নিজের ফ্ল্যাটটি ওকে দিয়ে দেন। দাদা RSS-এর হোলটাইমার। ওঁর কোনও ঠিকানা নেই।"


অজয় জানিয়েছেন, তাঁদের পৈতৃক ভিটেতে একটি মাটির রান্নাঘর ছিল। সেখানে একটি মুদির দোকান খোলেন সুজয়। পরে একটি ফিনান্স কোম্পানিতে চাকরি নেন। তার পর এদিক ওদিক এবং পরবর্তীতে অভিষেকের দফতরে চাকরি। অভিষেক দু'চার বার বাড়িতেও এসেছেন বলে জানান অজয়কৃষ্ণ। দু'পাঁচ বছর আগেই সুজয় নিজের বাড়ি বানান। হাত দেন প্রোমোটিংয়ের কাজেও। এলাকায় তা নিয়ে যথেষ্ট সুনামও ছিল তাঁর। যেচে পড়ে লোকে প্রোমোটিং করতে দিতেন বলে দাবি করেন অজয়কৃষ্ণ।