কলকাতা: ফরেন্সিক পরীক্ষায় কি মিলে গেল কাকুর কণ্ঠস্বর? প্রশ্ন উস্কে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ED দাবি করল, ফরেন্সিক রিপোর্ট তাদের দাবির স্বপক্ষেই গেছে। এদিন এজেন্সির তরফে বিচারপতি অমৃতা সিন্হার এজলাসে যে রিপোর্ট পেশ করা হয়, তাতে লিপস অ্য়ান্ড বাউন্ডস সংক্রান্ত তদন্তের অগ্রগতির তথ্য়ও ছিল। যদিও, তা দেখে বিচারপতি বলেন, ED র এই রিপোর্ট সন্তোষজনক নয়।


নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য় রাজনীতি এখন তোলপাড়। তার মধ্য়েই বুধবার হাইকোর্টে গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্ট জমা দিল ED। কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর কণ্ঠস্বরের ফরেনসিক পরীক্ষা এবং লিপস অ্য়ান্ড বাউন্ডস সংক্রান্ত তদন্তের অগ্রগতির তথ্য় রয়েছে বলে সূত্রের দাবি। এদিন কলকাতা হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে ED-র তরফে দাবি করা হয়,ফরেনসিক রিপোর্ট তাদের দাবির স্বপক্ষেই গেছে। যার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠছে, ED কালীঘাটের কাকুর কোনও কথোপকথনের নমুনা ED মিলিয়েছে? সেখানে কার সঙ্গে কথা বলেছিলেন কালীঘাটের কাকু?
 
ED সূত্রে দাবি, নিজের মোবাইল ফোন থেকে কাউকে ফোনের যাবতীয় তথ্য়, চাকরিপ্রার্থীদের মার্কশিট, অ্য়াডমিট কার্ড ডিলিট করার নির্দেশ দিয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। পাশাপাশি বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীর সঙ্গে তাঁর কথোপকথনও তদন্তে সামনে আসে। সেই কণ্ঠস্বর যে তাঁর, সেবিষয়ে নিশ্চিত হতে কণ্ঠস্বরের ফরেনসিক পরীক্ষা প্রয়োজন ছিল। যদিও, কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের জন্য় ED বারবার SSKM-এ গেলেও তা সংগ্রহ করা যায়নি। শেষে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে,৩ জানুয়ারি সন্ধেয় নাটকীয়ভাবে SSKM থেকে জোকা ESI হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। 


বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হা ED-র কাছে জানতে চান, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর কন্ঠস্বরের ফরেনসিক রিপোর্ট এসেছে ? উত্তরে ED-র তরফে জানানো হয়, হ্যাঁ। আমরা যে দাবি করছিলাম, তার স্বপক্ষেই রিপোর্ট এসেছে। সূত্রের দাবি, এদিন ED যে রিপোর্ট দেয়, তাতে লিপস অ্য়ান্ড বাউন্ডসের সম্পত্তি সংক্রান্ত তদন্তের অগ্রগতির বিষয়েও তথ্য় ছিল। রিপোর্ট দেখে বিচারপতি অমৃতা সিন্হা প্রশ্ন করেন, আপনাদের মনে হয় না, যে এই রিপোর্ট অসম্পূর্ণ? এই রিপোর্ট যদি আপনাদের পক্ষে থাকে, তাহলে রিপোর্ট নিয়ে আপনারা কী করলেন ? 


আরও পড়ুন, অধীরের পাশে হুমায়ুন, TMC-র বিক্ষোভের প্রতিবাদ করে বললেন..


উত্তরে ED-র তরফে জানানো হয়, একাধিক সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বিচারপতি তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। তিনি প্রশ্ন করেন,আয়ের উৎস কী? কোথা থেকে এত টাকা এসেছে? সেটা খুঁজে দেখেছেন? টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আপনারা কি খুঁজে দেখেছেন, যে চাকরি বিক্রি হয়েছে কিনা? উত্তরে ED-র তরফে জানানো হয়, আমরা রোজ তদন্তে অগ্রগতি করছি। আমরা সম্প্রতি ১৩৪ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছি। এই তথ্য়েও বিচারপতি খুশি হননি। তিনি ফের জানতে চান, আপনার কি মনে হয় না, যে দুর্নীতির অনুপাতে ১৩৪ কোটি খুব নগন্য অঙ্ক? এরপর বিচারপতি সরাসরি বলেন, ED র এই রিপোর্ট সন্তোষজনক নয়। তবে এখন সবার প্রশ্ন একটাই। কাকুর কণ্ঠস্বরের ফরেনসিক রিপোর্ট থেকে কি আগামীদিনে তদন্তে কোনও গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলবে?


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।