কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টের চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গেল রাজ্য সরকার। প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত, তার বিরুদ্ধেই শীর্ষ আদালতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরিহারাদের কি নতুন করে পরীক্ষা দিতে হবে? নাকি পুরনো ওএমআর-এর পুনর্মূল্যায়ন করে যোগ্যদের চাকরি দেওয়া হবে? মামলাকারী এবং আইনজীবীদের মধ্যে পরস্পরবিরোধী ব্য়াখ্য়া ঘিরে তৈরি হয়েছে ধন্দ। কমিশন কেন অযোগ্যদের বরখাস্ত করল না, এসএসসি ও রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন চাকরিহারাদের একাংশেরও। সেই আবহেই শীর্ষ আদালতে রাজ্যের সরকার। (SSC Recruitment Scam Verdict)
বুধবার রাজ্য সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে SLP দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে যাতে দ্রুত শুনানি করা যায়, সেই নিয়ে দ্রুত শুনানির আবেদনও জানাতে চলেছে রাজ্য। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় অথবা অন্য কোনও বেঞ্চে দ্রুত শুনানির আবেদন জানানো হতে পারে বলে খবর। লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার ১৫ দিনের মধ্যেই নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। তাই দ্রুত বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চায় রাজ্য। (SSC Recruitment Scam) যতদিন না সুরাহা হচ্ছে, তত দিন কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ চায় তারা।
লোকসভা নির্বাচন চলাকালীনই সোমবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশব বেঞ্চ ২০১৬ সালের SSC-র সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয়। গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি মিলিয়ে মোট ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করা হয়। SSC-র প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর যাঁরা চাকরি পান, তাঁদের ১২ শতাংশ সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে নির্দেশ দেয় আদালত।
কলকাতা হাইকোর্টের এই রায় নিয়ে মুখ খোলেন খোদ মমতা। আদালতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। হাইকোর্ট বেআইনি নির্দেশ দিয়েছে, তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন। কেউ না থাকলেও, তিনি সকলের পাশে আছেন বলে জানান। পাশাপাশি, বিজেপি-র নির্দেশেই কার্যত রায় লিখে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন মমতা।
একধাক্কায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি গেলে স্কুলগুলিতে পড়াবেন কারা, সেই প্রশ্নও তোলেন মমতা। এমনকি ১২ শতাংশ সুদ-সহ বেতন ফেরত দেওয়ার যে নির্দেশ দেয় আদালত, তা কী করে সম্ভব, তাঁদের পরিবারগুলির কী হবে, প্রশ্ন তোলেন। যদিও রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি গোটা পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকারকেই দায়ী করেছে। রাজ্য সরকার অযোগ্যদের পাশে থাকায়, যোগ্যদেরও চাকরি গেল বলে দাবি করেছে তারা।