প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: এসএসসি (SSC) নিয়োগকাণ্ডে ধৃত আরও একজন মিডলম্যান। নবম-দশম শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের (CBI) হাতে গ্রেফতার আরও ১। প্রদীপ সিংয়ের (Pradip Singh) পর গ্রেফতার আরও একজন মিডলম্যান প্রসন্ন রায়। প্রদীপ সিংকে (Pradip Singh) জেরায় মিলল ধৃতের খোঁজ। চাকরি পাইয়ে দিতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ। কাল ধৃতকে আলিপুর আদালতে পেশ।
নিয়োগকাণ্ডে ধৃত আরও একজন মিডলম্যান: এসএসসি (SSC) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত পরশু গ্রেফতার করা হয়, প্রদীপ সিংহকে। আপাতত হেফাজতেই আছে প্রদীপ সিংহ। সিবিআই সূত্রে খবর, মিডলম্যান প্রদীপ সিংহকে জেরা করে বেশ কিছু তথ্য হাতে এসেছে। তার ভিত্তিতেই এদিন ধৃত ওই ব্যক্তি তলব করে সিবিআই। দিনভর চলে জেরা। সিবিআই সূত্রে খবর, এই জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে ধৃত ওই ব্যক্তি তথ্য গোপনের চেষ্টা করে। এমনকী জেরায় সহযোগিতা করছিল না বলে অভিযোগ। এরপর তাকে গ্রেফতারির সিদ্ধান্ত নেয় সিবিআই। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল সিবিআই। প্রাথমিক তদন্তে সিবিআইয়ের অনুমান, এই দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত ব্যক্তি মিডলম্যান হিসেবে কাজ করত। ধৃত এই ব্যক্তি বিপুল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বেআইনিভাবে চাকরি দিয়েছে। যাঁরা চাকরি দিত তাঁদের কাছে টাকাও পৌঁছে দিত এই ব্যক্তি।
SSC’র প্রাক্তন উপদেষ্টা, শান্তিপ্রসাদ সিন্হার সঙ্গে ধৃত মিডলম্যান প্রদীপ সিংহের মেল চালাচালি হত। এই দাবি আগেই আদালতে করেছে CBI। এবার SSC নিয়োগকাণ্ডে ধৃত মিডলম্যান সম্পর্কে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এল! CBI সূত্রে দাবি, উদ্ধার হওয়া মেলগুলি পরীক্ষা করে SSC’র নবম-দশমে শিক্ষক পদে আবেদনকারীর প্রচুর অ্যাডমিট কার্ডের নম্বর মিলেছে।আগেই CBI সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, অযোগ্য প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়োগ কর্তাদের সেতুবন্ধনের কাজ করতেন ধৃত প্রদীপ সিংহ। ধৃত SSC’র প্রাক্তন উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিন্হার মোবাইল ফোনে প্রদীপ সিংহের নাম ‘ছোটু’ বলে সেভ করা ছিল। প্রদীপের ডাক নাম হল ছোটু। দু’জনের হোয়াট্যসঅ্যাপ চ্যাটও পাওয়া গেছে। এই পরিস্থিতিতে অ্যাডমিট কার্ডের নম্বর মেলায়, গোয়েন্দাদের সন্দেহ, যাঁদের অ্যাডমিট কার্ড পাওয়া গেছে, সেই চাকরিপ্রার্থীরা কেউই যোগ্য নন।
বুধবার রাতে নিউটাউন থেকে প্রদীপ সিংকে গ্রেফতার করে CBI। বৃহস্পতিবার সল্টলেকে তাঁর অফিসে তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা। CBI সূত্রে দাবি, নাকতলার কাছে প্রদীপ সিংহের একটি কম্পিউটার সেটআপ রয়েছে। সেই কম্পিউটার থেকে অযোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা পাওয়া গেছে। এছাড়াও মিলেছে প্রচুর মেল আইডি ও ফোন নম্বর। CBI সূত্রে দাবি, উদ্ধার হওয়া অ্যাডমিট কার্ডের নম্বরগুলির একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরা নিয়োগের পরীক্ষায় আদৌ ফেল করেছে, না পাস করেছে, তা দেখা হবে। তালিকার মধ্যে অযোগ্য হয়েও, কেউ চাকরি পেয়েছেন কিনা, সেটাও খতিয়ে দেখবেন গোয়েন্দারা। কোনও অযোগ্য চাকরি প্রার্থী বেআইনিভাবে শিক্ষকতার চাকরি পেয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে কোনওরকম আর্থিক লেনদেন হয়েছিল কিনা। যদি হয়ে থাকে, তাহলে টাকা নগদে না অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার করা হয়েছিল? নগদে টাকা দেওয়া হলে, সেটা কার মাধ্যমে কোথায় কীভাবে পৌঁছেছিল? অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করা হলে, সেটা কোন অ্যাকাউন্ট থেকে কোন অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল? এইসব প্রশ্নের উত্তর পেতে চাইছে CBI। যেসব চাকরিপ্রার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড উদ্ধার হয়েছে, তারাও এখন CBI স্ক্যানারে।
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: পঞ্চায়েতে পাখির চোখ চা-বলয়, তৃণমূলের ভোট প্রচারে জনসভা অভিষেকের