শুভেন্দু ভট্টাচার্য, মেখলিগঞ্জ : হাইকোর্টের (High Court) নির্দেশের পরেই পরেশ-কন্যার বেতন বন্ধ। এই মাস থেকেই অঙ্কিতা অধিকারীর (Ankita Adhikari) বেতন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জানিয়েছেন, আজ পরিচালন সমিতির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্কুলের চাকরি থেকে বরখাস্ত এবং তাঁকে কত টাকা ফেরত দিতে হবে- এই সংক্রান্ত নির্দেশ তাঁরা এখনও হাতে পাননি। হাইকোর্টের নির্দেশ পেলে সেই অনুযায়ী কাজ করবেন। আপাতত বেতন বন্ধের নির্দেশ পেয়েছেন তাঁরা।
এর আগে কী জানিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ-
মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা (Head Mistress) জানিয়েছিলেন, এতদিন যে বেতন পেয়েছে অঙ্কিতা তার হিসেব জমা দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী তিনি টাকা ফেরত দেবেন। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে পরেশ অধিকারী (Paresh Adhikari) তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে সেই বছর ২৪ নভেম্বর তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা কোচবিহারের ইন্দিরা বালিকা বিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকার পদে নিযুক্ত হন। তাই তিনি শিক্ষিকা পদে ৪১ মাস কাজ করে যে বেতন পেয়েছেন, তার পুরোটাই ফেরত দিতে হবে। আপাতত তিনি এই সময়কালে ঠিক কত টাকা পেয়েছেন সেটারই হিসেব কষা শুরু করে ইন্দিরা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়।
আরও পড়ুন ; 'কার সঙ্গে ফোনে কথা, কবে চাকরিতে যোগ মেয়ের,' চার ঘণ্টা ধরে পরেশকে জেরা, অঙ্কিতা অন্তরালেই
ঠিক কী অভিযোগ ছিল-
মন্ত্রী-কন্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যোগ্যতম প্রার্থীর চেয়ে কম নম্বর পেয়েও শিক্ষক পদে নিয়োগ করা হয়েছিল মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে। যে মামলার রায় দিতে গিয়ে অভিযোগের সত্যি হওয়ার প্রমাণ পেয়ে মন্ত্রীকন্যাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি তাঁকে সমস্ত বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)।
প্রভাব খাটিয়ে মেয়েকে চাকরি পাইয়ে দেন মন্ত্রী!
প্রভাব খাটিয়ে মেয়েকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অঙ্কিতার বাবা তথা শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। সেই মামলায় পরেশ অধিকারীকে শনিবার ফের জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। বৃহস্পতিবার ৩ ঘণ্টা, শুক্রবার সাড়ে ৯ ঘণ্টা, শনিবার ৪ ঘণ্টা—গত ৩ দিনে মোট সাড়ে ১৬ ঘণ্টা CBI-এর জিজ্ঞাসাবাদের মুখে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। শুক্রবারের ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হওয়ার পরই পরেশ অধিকারীকে শনিবারও আসতে বলে দিয়েছিল সিবিআই। সেই মতো, শনিবার সকালে ১০.৩৫ মিনিটে নিজাম প্যালেসে হাজির হন পরেশ। সঙ্গে ছিল গুরুত্বপূর্ণ নথি। CBI সূত্রের খবর, সঙ্গে করে আনা নথি সিবিআইয়ের কাছে জমা দেন পরেশ। প্রশ্ন করা হয়, SSC-র মেধাতালিকায় কত নম্বরে নাম ছিল তাঁর মেয়ে অঙ্কিতার? অঙ্কিতা কবে স্কুলের চাকরিতে যোগ দেন?মেয়ের চাকরি পাওয়া এবং কাজে যোগদানের মাঝের সময়টায় পরেশ কার কার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছিলেন? অঙ্কিতার বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কী কথা হয়েছিল?সূত্রের খবর, এই সমস্ত বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় পরেশ অধিকারীকে।