কলকাতা : SSC নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে তোলপাড় গোটা রাজ্য। ৮টি মামলায় CBI তদন্ত চলছে। আচার্য সদনে সংরক্ষিত নথি যাতে নষ্ট বা বিকৃত করা না হয়, তার জন্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেইমতো SSC অফিসে গিয়ে সংরক্ষিত নথি খতিয়ে দেখে CBI-এর প্রতিনিধি দল। জোরদার এই তদন্ত-প্রক্রিয়ার মধ্যেই বিরোধীরাও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে চাপ বাড়াচ্ছে। চাঁচাছোলা ভাষায় রাজ্যের শাসকদলকে একাধিকবার আক্রমণ করেছেন সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেসের বিভিন্ন নেতা। এবার তথ্য তুলে রাজ্যের শাসকদলকে কার্যত তুলোধনা করলেন সিপিএম (CPIM) নেতা সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty)। 


কী বললেন সুজন ?


এবিপি আনন্দের যুক্তি-তক্কোর মঞ্চে এই ইস্যুতে সুর চড়িয়ে সুজন বলেন, "বাম আমলে ১৯৯৭ সালে এসএসসি তৈরি হওয়ার পর, ১৪ বছরে ১৪ বার দুর্গাপুজো হয়েছে, ১৪বার এসএসসিও হয়েছে। নিয়োগ হয়েছে। একবারও অনশন, কোর্ট কাছারি- কিছুর দরকার হয়নি। আর এই আমলে গত ১০ বছরে এসএসসি চেয়ারম্যান পদে বদল হয়েছে আটবার। নিয়োগ হয়েছে একবার। এর পরেরবার নিয়ে আলাপ-আলোচনা-দুর্নীতি এখনও চলছে। কিন্তু, হয়নি। গোটা ব্যবস্থার মধ্যে এতটাই দুর্নীতি হয়ে রয়েছে। শিক্ষক নিয়ে যা চলছে তা খুবই যন্ত্রণাদায়ক। একের পর এক দুর্নীতি, বিক্ষোভ, অবস্থান, অনশন, পুলিশি আক্রমণ, প্যানেল বাতিল, ওয়েবসাইটে তালিকা নেই, কোর্ট কাছারি, আবার জাল তালিকা, এসএমএসে খবরা-খবর, এসএসসি এবং পর্ষদ-পারস্পরিক দোষারোপ, লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার খেলা। নেতা-মন্ত্রী সবাই যুক্ত। এলাকায় এলাকায় উপেনবাবু বর্ণিত, রঞ্জন দে-র আমদানি। ভয়ঙ্কর। সিবিআই এবং ইডি স্বাভাবিক।" 


আরও পড়ুন ; ‘বাম-রাম‘ খেলা হচ্ছে, এসএসসি দুর্নীতি নিয়ে বললেন দেবাংশু


তিনি বলেন, "কিন্তু, যাঁরা স্বচ্ছভাবে নিয়োগপত্র পেয়েছেন, তাঁরাও যেন অপরাধী বলে বিবেচিত হয়ে যাচ্ছেন ! এটাও আর একটা বড় বিপর্যয়। ২০১৬-র পর হাইস্কুলে এবং ২০১৭-র পর প্রাইমারিতে- গত পাঁচ ছয় বছর ধরে নিয়োগের কোনও নোটিফিকেশন নেই। ২০১৬-র পর ১২ লক্ষর বেশি ছেলে-মেয়ে বিএড পাশ করেছে। দেড়-দুই-আড়াই-তিন লক্ষ টাকা খরচ করে। একইরকমভাবে ডিএলএড। এই যে ১৫ লক্ষ ছেলে-মেয়ে এদের কী হবে ? এরা তো কাজ চায়। ২০১৪-র প্রাইমারি নিয়োগ পেন্ডিং, ২০১৫-র আপার প্রাইমারি...সাত বছর কোনও নিয়োগ নেই। একটা গোটা প্রজন্ম শেষ হয়ে গেল! এর শেষ কোথায় ? সাড়ে ৫ লক্ষ শূন্য পদ রাজ্যের সরকার-আধা সরকারি ক্ষেত্রে, সাড়ে ৩ লক্ষ শিক্ষা এবং শিক্ষাকর্মী- এই শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে। তার নিয়োগ কোথায় ? তার নিয়োগের কী ব্যবস্থা হবে ? সোটা তো সবথেকে বেশি জরুরি। নাকি মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী-সবাই মিলে সেদিকে না তাকিয়ে, শুধুই ধামাচাপা দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন, প্রশ্নটা সেখানে। স্কুলে ফেল অঙ্কিতা অধিকারী কলেজের অধ্যাপনায় পাস। তৃণমূল ছাত্রনেতাদের একের পর এক কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপকের তালিকায় নাম ঢুকেছে।"