সন্দীপ সরকার, কলকাতা: আমফানের সময় বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছে আধার কার্ড। সচিত্র পরিচয়পত্র না থাকায় প্রায় দুমাস ধরে আটকে অস্ত্রোপচার। হাড় ভাঙার যন্ত্রণা নিয়ে এসএসকেএমের বেডে দিন কাটছে ফুটপাতবাসী মহিলার। বিষয়টি জানতে পেরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন সুপার।


সরকারি সচিত্র পরিচয়পত্র নেই। তার জেরে প্রায় দু’মাস ধরে সরকারি হাসপাতালে আটকে রয়েছে অস্ত্রোপচার। হাড় ভাঙার যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালের বেডে দিন কাটছে ফুটপাতবাসী মহিলার। কবে মেয়ের অস্ত্রাপচার হবে? সেই অপেক্ষায় হাসপাতাল চত্বরে কাপড়ের তাঁবু খাটিয়ে এই শীত আর বৃষ্টির মধ্যে দিনযাপন করছেন বৃদ্ধা মা। মেয়ের অস্ত্রোপচারের অপেক্ষায় ট্রমা কেয়ারের সামনে তাঁবু খাটিয়ে টানা দুমাস বৃদ্ধা মা। এই ঘটনা রাজ্যের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএমের। ইনি হলেন রানি কুরেশি। নিউ মার্কেটের ফুটপাতে থাকেন। এখন এসএসকেএমে শয্যাশায়ী। 


পরিবার সূত্রে খবর, গত ৯ ডিসেম্বর ফুটপাতের ধারে পার্ক করে রাখা একটি বাইকের ওপর বসেছিলেন ৪০ বছরের এই মহিলা। টাল সামলাতে না পেরে বাইক থেকে পড়ে যান তিনি। গুরুতর চোট পান কোমরে ও পায়ে। পরের দিন এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন মহিলার কোমরের ও পায়ের হাড় ভেঙেছে। কোমরে অস্ত্রোপচার করতে হবে। 


প্রায় দুমাস হতে চললেও অস্ত্রোপচার এখনও হয়নি! রোগী রয়েছেন ট্রমা কেয়ার সেন্টারের বেডে। ফুটপাতবাসী পরিবারের দাবি, গত বছর আমফানের সময় প্রবল বৃষ্টিতে তাঁদের আধার কার্ড জলে ভেসে গিয়েছে। আর কোনও সরকারি সচিত্র পরিচয়পত্র নেই। তা না থাকায় থমকে রয়েছে অস্ত্রোপচার। রোগিণীর মা সামিমা কুরেশি বলেন, "ডাক্তার বলেছিল অপারেশন করবে। পরে বলল আধার ছাড়া অপারেশন হবে না। আমাদের আধারকার্ড হারিয়ে গিয়েছে। কাউন্সিলরকে দিয়ে লিখিয়ে এনেছি নিল না। মেয়েটা খারাপ অবস্থায় আছে।" 


এসএসকেএম হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে জমা পড়েছে আধার কার্ড হারানোর ডায়েরির কপি। এবার কী অস্ত্রোপচার হবে? এবিষয়ে যোগাযোগ করলে, এসএসকেএম হাসপাতালের সুপারের বক্তব্য,  পরিচয়পত্র না থাকলে কারোর চিকিৎসা আটকে থাকার কথা নয়। আপনাদের মুখে ঘটনাটা শুনলাম। প্রয়োজনীয় যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেওয়া হচ্ছে।