ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: খুব শিগগিরই রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার মুকুটে জুড়তে চলেছে নতুন পালক। সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএমে (SSKM) চালু হতে চলেছে রোবোটিক সার্জারি (Robotic Surgery)। সব ঠিক থাকলে নতুন বছরেই গোড়া থেকেই তা চালু হতে পারে। 


থ্রিডি স্ক্রিনে চোখ রেখে বসে রয়েছেন চিকিৎসক। রোবটের সরু হাত তাঁর নির্দেশ মতো পৌঁছে যাচ্ছে রোগীর শরীরের সূক্ষ্ম অংশে। অনেক কম রক্তপাত ঘটিয়ে সূক্ষ্ম জায়গায় নির্ভুলভাবে সেরে ফেলা হচ্ছে জটিল অস্ত্রোপচার (Operation)। খুব শিগগিরই এই দৃশ্য দেখা যাবে এরাজ্যের এসএসকেএমে।


রাজ্যের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল সূত্রে খবর, চিকিৎসার এই উৎকর্ষ কেন্দ্রে এবার রোবটিক সার্জারি শুরু হতে চলেছে। নতুন আউটডোর ভবনের একটি তলে বিশেষ অপারেশন থিয়েটার তৈরির কাজ শেষ। কোন সংস্থার যন্ত্রের সাহায্যে রোবোটিক সার্জারি হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হওয়া বাকি আছে। ইতিমধ্যেই সেই সংক্রান্ত টেন্ডার প্রকাশ করেছে এসএসকেএম। 


এরমধ্যেই সেজে উঠেছে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার (Operation Theatre)। সব ঠিক থাকলে নতুন বছরের শুরুতে রোবোটিক সার্জারি চালু হয়ে যাবে এসএসকেএম হাসপাতালে, এমনটাই খবর সূত্রের। অনেক নামকরা বেসরকারি হাসপাতালে রোবোটিক সার্জারির ব্যবস্থা আছে। কিন্তু এরাজ্যের কোনও সরকারি হাসপাতালে এখনও পর্যন্ত এই ব্যবস্থা নেই। এসএসকেএমই হতে চলেছে রাজ্যের প্রথম সরকারি হাসপাতাল, যেখানে রোবট-সহায়তা অস্ত্রোপচার পদ্ধতি চালু হবে। 


কম খরচে, নিখুঁতভাবে অতি সূক্ষ্ম এবং অনেক কম রক্তপাতহীন অস্ত্রোপচার করা সম্ভব রোবট প্রযুক্তির সাহায্যে। এসএসকেএম-এর ইএনটি বিশেষজ্ঞ অরুণাভ সেনগুপ্ত বলেন, 'সূক্ষ্ম অপারেশন। হাত অনেক সময় ঠিকমত ঘোরে না। রক্তপাত কম হবে। রোগী তাড়াতাড়ি ছুটি পাবে। নিখুঁত অস্ত্রোপচার হবে।'


চিকিৎসকরা বলছেন, রোবোটিক সার্জারি প্রযুক্তিতে বিশেষভাবে উপকৃত হবেন ক্যানসার আক্রান্ত রোগীরা। এমনটাও জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের অঙ্কোলজিস্ট কৌশিক চট্টোপাধ্যায়।


এসএসকেএম সূত্রে খবর, এক একটি রোবটের দাম প্রায় ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা। নাম রোবোটিক সার্জারি হলেও রোবটই এখানে শেষ কথা নয়। রোবটের নিয়ন্ত্রক হিসেবে থাকেন শল্য চিকিৎকরাই। কম্পিউটার স্টেশনে বসে রোবোটিক হাতের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁরা। এসএসকেএম সূত্রে খবর, পুরো বিষয়টি হাতে-কলমে শিখিয়ে দেওয়া হবে চিকিৎসকদের। 


এসএসকেএম সূত্রে খবর, রোবোটিক সার্জারির বিষয়টি তত্ত্বাবধানের জন্য ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এমএসভিপি সহ বিভিন্ন বিভাগের প্রধানরা রয়েছেন ওই কমিটিতে। 


আরও পড়ুন: বছরে একবারই তৈরি এই 'বিশেষ' জিলিপি! খেতে হলে যেতে হবে এখানে