কলকাতা : গরুপাচারকাণ্ডে গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডল। সকালে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বোলপুরের বাড়ি সিআরপি-র ১০০ জওয়ান নিয়ে ঘিরে ফেলে সিবিআই। তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় দুর্গাপুরের উদ্দেশে। সেখানে মেডিক্যাল টেস্টের পর আজই অনুব্রত মণ্ডলকে আসানসোল কোর্টে তোলার কথা সিবিআইয়ের। আর তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা গ্রেফতার হওয়ার পরই তাঁকে ও ঘাসফুল শিবিরকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন সুকান্ত মজুমদার।


রাজ্য বিজেপির সভাপতির কথায়, 'আগেউ বলেছিলাম, খাঁচা তৈরি হচ্ছে, হয়ে গেলেই খাঁচার জিনিস খাঁচায় ঢুকে যাবে। বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে আর তৃণমূল নেতারা জেলা সুন্দর। কারণ তৃণমূলের তো সবাই চোর। আর এবার বোঝা যাবে কত বড় বীরপুরুষ তিনি। সিবিআইয়েরক দশবার সমনেও যাননি। এতদিন লুকোচুরি খেলছিলেন, লুকোচুরি খেলা শেষ হতেই ধাপ্পা খেয়ে গেছেন। এবার জেলে থেকে বিশ্রাম করুন। মাথায় অক্সিজেনও এবার ভাল পৌঁছবে।'  শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, 'অনুব্রত মণ্ডল মাফিয়া। যাদেরকে উনি মুড়ির টিনে ভরে গরু পাচারের টাকা পাঠিয়েছেন, আশা করি তাদের নামও সিবিআইকে জানাবেন।'


সুজন চক্রবর্তীর আক্রমণ, 'যখন উনি চড়াম চড়াম ঢাক বাজানোর কথা বলতে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্রয় দিয়েছেন, পুলিশকে বোমা মারার কথা বললে মুখ্যমন্ত্রী সার্টিফিকেট দিয়েছেন। অনুব্রত মণ্ডল এমনই দাপুটে নেতা যে সব জেলার তৃণমূল জেলা সভাপতি বদল হয়েছে, শুধুমাত্র বীরভূম ছাড়া। উনি আসলে মুখ্যমন্ত্রীর স্নেহধন্য। তাই এই গ্রেফতারিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিবৃতি দিন, সেই দাবি রাখছি।'


বামফ্রন্টের পাশাপাশি বিরোঝী বিজেপি-র একাধিক নেতাও নিশানা করেছেন অনুব্রত মণ্ডলকে। রাসরি অনুব্রত মণ্ডলকে আক্রমণ শানিয়ে দিলীপ ঘোষ লেখেন, 'ঘনিয়ে এল ঘুমের ঘোর, গানের পালা সাঙ্গ মোর। অনুব্রত মণ্ডলের খেলা শেষ! ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়। কাল ও আজ মিলিয়ে তিন গ্রেফতার। লাইনে অনেকেই অপেক্ষায়...'। যে পোস্টে জনৈক এক বিজেপি সমর্থকের মন্তব্য 'গ্রামে ঢাক বাজিয়ে নকুলদানা বিলি করতে আপনার অনুমতি চাইছি...' যে প্রশ্নের উত্তরে 'একদম' লিখেও সায় দেন দিলীপ ঘোষ


আদালতের নির্দেশনামা ও মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে পৌঁছয় সিবিআই। সিবিআই (CBI) আধিকারিকদের দাবি, গরু পাচারকারীদের সঙ্গে সরাসরি অনুব্রত মণ্ডলের যোগ মিলেছে। তাঁদের থেকে টাকাও অনুব্রত পেতেন বলেই দাবি করেছেন সিবিআইয়েক তদন্তকারী অফিসাররা। প্রসঙ্গত ইতিমধ্যে অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে (Saigal Hossain) গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তিনি রয়েছেন হেফাজতে। তার সঙ্গে অনুব্রত-র যোগাযোগ থেকে শুরু করে সম্প্রতি দাখিল করা চার্জশিট, সবেতেই অনুব্রত মণ্ডলের নাম রেখেছেন তদন্তকারী অফিসাররা।


গরুপাচার মামলায় (Cow Smuggling Case) ১০ বার অনুব্রতকে তলব করে সিবিআই। মাত্র একবার হাজিরা দেন তৃণমূল জেলা সভাপতি। অসুস্থতার কথা বলে গতকালও হাজিরা এড়ান অনুব্রত। সিবিআই সূত্রে বলা হয়েছে, গতকাল বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিত্সক চন্দ্রনাথ অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। আজ ওই চিকিত্সকের বয়ান রেকর্ড করা হতে পারে। সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত প্রভাব খাটিয়ে চিকিত্সককে দিয়ে প্রেসক্রিপশন লেখানোর চেষ্টা করেছিলেন কিনা, তা জানতে চাওয়া হয়। কার নির্দেশে ওই সরকারি চিকিত্সক বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়িতে গিয়েছিলেন, তাও জানতে চায় সিবিআই। খবর সূত্রের। 


আরও পড়ুন- গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে সিবিআই, বাড়ি থেকে বেরিয়ে কী বললেন অনুব্রত