কলকাতা : ঠাকুরঘরের চৌহদ্দি পেরিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে নকুলদানা চর্চার কারণ হয়েছিল তাঁর সুবাদে। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি- ঠিক কোন নকুলদানার কথা নির্বাচনের প্রাক্কালে বলেছিলেন, তা নিয়ে জোরদার তর্ক-বিতর্ক থাকলেও গরুপাচারকাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে তাঁর গ্রেফতারির পর খাওয়ার নকুলদানাই হয়ে উঠল বিরোধীদের খোঁচা দেওয়ার সরঞ্জাম। বাঁকুড়া হোক বা বেলদা, রাজ্যের একাধিক জায়গায় বিজেপি কর্মীরা একে অপরকে ও পথচলতি সাধারণ মানুষকে নকুলদানা খাওয়ালেন অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পরেই। এমনকি সোশাল মিডিয়াতে নকুলদানা বিলির ছাড়পত্র দিয়ে এভাবেই দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতার গ্রেফতারি বিরুদ্ধে খোঁচা দিলেন গেরুয়া শিবিরের নেতা দিলীপ ঘোষ।


রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি আজ একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। যেখানে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি থেকে গরুপাচারকাণ্ড নিয়ে রাজ্য সরকারকে তিনি খোঁচা দেন। সরাসরি অনুব্রত মণ্ডলকে আক্রমণ শানিয়ে দিলীপ ঘোষ লেখেন, 'ঘনিয়ে এল ঘুমের ঘোর, গানের পালা সাঙ্গ মোর। অনুব্রত মণ্ডলের খেলা শেষ! ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়। কাল ও আজ মিলিয়ে তিন গ্রেফতার। লাইনে অনেকেই অপেক্ষায়...'। যে পোস্টে জনৈক এক বিজেপি সমর্থকের মন্তব্য 'গ্রামে ঢাক বাজিয়ে নকুলদানা বিলি করতে আপনার অনুমতি চাইছি...' যে প্রশ্নের উত্তরে 'একদম' লিখেও সায় দেন দিলীপ ঘোষ। শুধু দিলীপ ঘোষই নন শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার সহ একাধিক বিজেপি নেতা কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলকে।


আরও পড়ুন- 'অনুব্রত মুড়ির টিনে কাদের কাছে টাকা পাঠিয়েছেন সেই নাম বলবেন আশা রাখি', মন্তব্য শুভেন্দুর


পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর তৃণমূলের আরও এক হেভিওয়েট নেতা কেন্দ্রীয় এজেন্সির জালে। গরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডল। গতকাল হাজিরা এড়ানোর পর আজ সকালে আদালতের নির্দেশনামা ও মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে বোলপুরের নীচুপট্টিতে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়িতে পৌঁছে যান সিবিআই অফিসাররা। অনুব্রতর বাড়ি ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন সিবিআই আধিকারিকরা। বাড়ির সকলের মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয়। 


সিবিআই সূত্রে খবর, এর আগে গতকাল বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিত্সক চন্দ্রনাথ অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। আজ ওই চিকিত্সকের বয়ান রেকর্ড করা হতে পারে। সিবিআই সূত্রে খবর, অনুব্রত প্রভাব খাটিয়ে চিকিত্সককে দিয়ে প্রেসক্রিপশন লেখানোর চেষ্টা করেছিলেন কিনা, তা জানতে চাওয়া হয়। কার নির্দেশে ওই সরকারি চিকিত্সক বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বাড়িতে গিয়েছিলেন, তাও জানতে চায় সিবিআই। খবর সূত্রের। 


গরুপাচার মামলায় ১০ বার অনুব্রতকে তলব করে সিবিআই। ৯ বার হাজিরা এড়াল তৃণমূল জেলা সভাপতি। অসুস্থতার কথা বলে গতকালও হাজিরা এড়ান অনুব্রত। গরুপাচার মামলায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন।


আরও পড়ুন- গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে সিবিআই, বাড়ি থেকে বেরিয়ে কী বললেন অনুব্রত