কলকাতা: এগরায় বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের (Egra Incident) পর কেন্দ্রকে নিশানা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজের টাকা না মেটানোতেই গরিব মানুষকে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বাজি কারখানায় কাজ করতে যেতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূল সংসদ (TMC)। তাঁর সেই মন্তব্যকে এ বার হাতিয়ার করলেন বঙ্গ বিজেপি-র (BJP) সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। তৃণমূল ১২ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও মানুষকে কেন ১০০ দিনের কাজের টাকার উপর নির্ভর করতে হচ্ছে, প্রশ্ন তোলেন সুকান্ত।
বিজেপির কার্যকারিণী বৈঠকে রবিবার অভিষেকের মন্তব্যকে হাতিয়ার করেন সুকান্ত। সেখানে তিনি বলেন, "আমরা দেখতে পাচ্ছি তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড লোককে বোঝাতে গিয়ে বলছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছেন। তার জন্য নাকি আমাদের এগরা বিস্ফোরণে নিহতরা বাধ্য হয়ে বোমা কারখানায়. বাজি কারখানায় কাজ করতে যান! এতে প্রশ্ন ওঠে, ১২ বছর একটি সরকার থাকার পর, পেট ভরানোর জন্য় যদি ১০০ দিনের ২০৭ টাকা মজুরির কাজের দরকার হয় মানুষের, তাহলে রাজ্য সরকার ১২ বছর ধরে কী করেছে? নিজেরাই স্বীকার করছেন যে তাঁদের সরকার অপদার্থ। মানুষের কাছে এদের অপদার্থতা তুলে ধরতে হবে।"
এগরাকাণ্ডের পর সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ১০০ দিনের কাজের প্রসঙ্গ টেনেছিলেন অভিষেক। তাঁর বক্তব্য ছিল, "যে দুই মহিলা মারা গিয়েছেন, তাঁর জবকার্ড হোল্টার, ১০০ দিনের কাজ করতেন। ১০০ দিনের কাজের টাকা পাচ্ছেন না বলে বাধ্য হয়ে জীবন বাজি রাখেন। পেট চালাতে কাজ নেন বাজি কারখানায়। এর জন্য দায়দায়িত্ব কার?"
অভিষেক আরও বলেন, "একটা বিস্ফোরণ হল। দুর্ভাগ্যজনক। মৃত্যু নিয়ে কখনও রাজনীতি করা উচিত নয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের বিমাতৃসুলভ আচরণের জন্য আজ পেট চালাতে বাজি কারখানায় গিয়ে কাজ নিচ্ছেন মানুষ। এর দায়িত্ব এড়াতে পারেন না নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ। বাংলায় যদি ১০০ দিনের টাকা ছাড়ত, তাহলে আজ দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণ যেত না। বিজেপি বিস্ফোরণ নিয়ে রাজনীতি করছে, কিন্তু মনুষ্যত্ব থাকলে পদত্যাগ করা উচিত।" অভিষেকের সেই মন্তব্যকেই এ দিন হাতিয়ার করেন সুকান্ত।
সুকান্তের মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া চাইলে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, "এই ধরনের অকারণ বিবৃতি দিয়ে বাজার গরম করা অর্থহীন। ১০০ দিনের কাজ হচ্ছে গোটা ভারতে। ডাবল ইঞ্জিন সরকারেও ১০০ দিনের কাজ হয়। পার্থক্য শুধু এটুকুই যে, ওখানে টাকা দিচ্ছে, এখানে দিচ্ছে। এর কারণ হল, এখানে ভাল কাজ হচ্ছে, কিন্তু বিজেপি-কে ভোট দেননি মানুষ।"
কুণাল আরও বলেন, "বিশেষ করে লকডাউনের পর পরিযায়ী শ্রমিকরা সমস্যায় পড়েছেন। অপরিকল্পিত লকডাউনে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে মারা গিয়েছেন মানুষ। তার পরেও যাঁরা ঘরে ফিরেছেন, সেখানে ১০০ দিনের কাজ সহায়ক হচ্ছে। শুধু বাংলায় নয়, সারা ভারতে হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে শুধু ভাল কাজ হচ্ছে, ভাল কাজ পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে মানুষকে। সেখানেই টাকা বন্ধ।" ১০০ দিনের কাজ কোন কোন রাজ্যএ হচ্ছে, তার তালিকা তুলে ধরলেই বিজেপি-র দাবি ধোপে টিকবে না বলেও দাবি করেন কুণাল।