কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: বকেয়া টাকা নিয়ে সংঘাত চরমে। তার মধ্যেই প্রকাশ্য মঞ্চে সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) নম্বর প্রকাশ্যে এনেছে তৃণমূল। সেই নিয়ে চরমে উঠল রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। তাঁরা ফোন করলেই টাকা চলে আসবে বলে এর আগে মন্তব্য করেছিলেন বিজেপি-র (BJP) রাজ্য সভাপতি। তার উল্লেখ করে জনসমক্ষে সুকান্তের নম্বর প্রকাশ করা হয় তৃণমূলের (TMC) তরফে। তাতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) রাজনৈতিক জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুললেন সুকান্ত। এর পাল্টা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা জানিয়েছেন, জনপ্রতিনিধির নম্বর সকলের কাছে থাকা উচিত।


১০০ দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ নিয়ে লাগাতার আন্দোলনের মধ্যেই, বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্তের ফোন নম্বর প্রকাশ্যে এনেছে তৃণমূল। আর সেই নিয়েই রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চরমে উঠল। দুই তরফে বাগযুদ্ধ শুরু হয়েছে। (Sukanta Majumdar Phone Number)


ফোন নম্বর প্রকাশ নিয়ে এদিন অভিষেকের রাজনৈতিক জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সুকান্ত। বলেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সবকিছু ঊর্ধ্বে গিয়ে যেভাবে আমার ব্যক্তিগত নম্বর সকলের সামনে প্রকাশ করেছেন, তাতে ওঁর পরিপক্কতার অভাব, বালখিল্যতাই প্রকাশ পেয়েছে।" সুকান্তকে জবাব দিতে গিয়ে পাল্টা শশী বলেন, "যেহেতু আপনি ফোন করলেই কাজ হয়ে যাবে, তাই আপনার ফোন নম্বর দিয়েছি।"


বকেয়া টাকা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত দীর্ঘ দিনের। এক দিকে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা আটকে রাখার অভিযোর উঠছে। অন্য দিকে, কেন্দ্রের দাবি, রাজ্যের তরফে সঠিক হিসেব মেলেনি। সেই পরিস্থিতিতে বাংলায় বিজেপি নেতাদের মুখেও নানা মন্তব্য শোনা গিয়েছে। চিঠি লিখে দিল্লিকে টাকা পাঠাতে নিষেধ করেছেন বলে জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সম্প্রতি সুকান্তকেও বলতে শোনা যায়, "সুকান্ত মজুমদার একটা ফোন করলেই সব টাকা চলে আসবে।"


আরও পড়ুন: Firhad Hakim: ভাইয়ের শ্রাদ্ধে যেতে না দিয়ে ৯ ঘণ্টা ধরে হেনস্থা, ক্ষোভে ফেটে পড়লেন ফিরহাদ


সেই আভহেই কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বকেয়া টাকা আটকে রাখা, বাংলার সঙ্গে বঞ্চনা করার অভিযোগ নিয়ে অতি সম্প্রতি দিল্লি অভিযানে গিয়েছিল তৃণমূল। এর পর গত তিন দিন ধরে রাজভবনের সামনে ধর্না অবস্থান করছে, যাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন খোদ অভিষেক। সেখানেই সুকান্তের মন্তব্যকে হাতিয়ার করেন তিনি। শনিবার রাজভবনের কাছে ধর্নামঞ্চ থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতির নম্বর প্রকাশ্যে আনতে বলেন। শুধু তাই নয়, 'সুকান্তকে ফোনে বলো, ১০০ দিনের টাকা ফেলো' নামের একটি কর্মসূচিরও ঘোষণা করেন। 


যদিও সুকান্তের দাবি, তাঁকে ফোন করে টাকা না দেওয়ারই অনুরোধ জানাচ্ছেন বঙ্গবাসী। তেমন একটি অডিও রেকর্ডিংও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন তিনি। কিন্তু ফোন নম্বর প্রকাশের বিষয়টি নিয়ে অভিষেককে আক্রমণ করতে ছাড়েননি সুকান্ত। তাঁকে কটাক্ষ করে শশী বলেন, "এত বিরক্ত হচ্ছেন কেন? আপনি তো জনপ্রতিনিধি। আপনার ফোন নম্বর বিজেপি কর্মীদের কাছে যেমন থাকবে, জনসাধারণের কাছেও তো থাকবে!" এই মন্তব্য, পাল্টা মন্তব্যেই এই মুহূর্তে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি।