কলকাতা: টানা সাড়ে ন'ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তল্লাশি (CBI Raids)। তাতে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছিলেন মেয়ে প্রিয়দর্শিনী। সাংবাদিক বৈঠকে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও (Firhad Hakim)। জানালেন, পৌরসভার নিয়োগের কোনও ফাইল মন্ত্রীর আসে না। তাহলে বার বার তাঁকে এভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে কেন, প্রশ্ন তোলেন তিনি। শুধু তাই নয়, ভাইয়ের শ্রাদ্ধে যেতে না দিয়ে, তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন।


পৌরসভায় নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। রবিবার সকালে তাঁরা চেতলায় ফিরহাদের বাড়িতে পৌঁছন। তার পর দীর্ঘ সাড়ে ন'ঘণ্টা ধরে চলে তল্লাশি। CBI বেরিয়ে যাওয়ার পরই ফিরহাদের মেয়ে প্রিয়দর্শিনী জানান, তাঁর বাবাকে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। এর পর সন্ধেয় সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষোভ উগরে দেন ফিরহাদ।


সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই এদিন গর্জে ওঠেন ফিরহাদ। বলেন, "বাংলার মানুষকে, চেতলার মানুষকে প্রশ্ন করব আমি। এই চেতলায় জন্মেছি, বড় হয়েছি। চেতলার মানুষ আট-আট বার বিপুল ভোটে জয়ী করেছেন আমাকে। কাউন্সিলর, বিধায়ক হয়েছি। অনেক দিন হয়েছে বাংলার রাজনীতিতে। তাই আমি প্রশ্ন করছি, আমি কি চোর? আমি কি চুরে করেছি? বার বার করে কেন এই হেনস্থা? বিজেপি-র মতাদর্শের সামনে মাথানত করব না, ওদের খাতায় গিয়ে নাম লেখাব না, তাই আমাকে হেনস্থা, আমার পরিবারকে হেনস্থা। কখনও গ্রেফতার করে নিয়ে চলে যাচ্ছে, কখনও সারাদিন ধরে বাড়িতে তল্লাশি। আজ আমার ভাইয়ে শ্রাদ্ধ। সেখানে যেতে দেওয়া হল না। কী অপরাধ করেছি?"


আরও পড়ুন: Madan Mitra: ‘আমি মদন মিত্র, বুকের পাটা ফুলিয়ে বলছি...মোদিজি যাচ্ছেন,’ CBI হানার পর বললেন মদন


ফিরহাদ আরও বলেন, "ছোটবেলা থেকে চেতলার মানুষদের সামনে বড় হয়েছি। কোনও রকমে ব্যবসা দাঁড় করিয়েছি, যার যখন দরকারপ পড়েছে, দাঁড়িয়েছি, সেটাই কি আমার অপরাধ? কেন বার বার করে হেনস্থা। আইন অনুযায়ী, পৌরনিয়োগের সঙ্গে পৌর মন্ত্রীর কী সম্পর্ক? পৌরনিয়োগের কোনও ফাইল কি মন্ত্রীর কাছে আসে? আইন এবং নিয়ম, কোনও ভাবেই হয় না। তাহলে কেন বার বার করে এই হেনস্থা। যারা চাকরি দিয়ে টাকা নেয়, তাদের কীট বলে মনে করি। এর চেয়ে নিজের মায়ের মাংস খাওয়া ভাল। বার বার করে চোর। আমি বামফ্রন্ট আমলেও লড়াই করেছি। মামলাও হয়েছে। দাঙ্গা, মারপিট, বাধা সৃষ্টির মামলা দায়ের হয়েছে। এই অপমান হয়নি। বাড়ির  লোকজনকে জড়ানো হয়নি। নিশ্চিত ভাবে মার খেয়েছি, হাসপাতালে গিয়েছি। কিন্তু এই অপমান হয়নি।"


কোনও দিন দুর্নীতিমূলক কোনও কাজ করেননি বলেও জানান ফিরহাদ। বলেন, "কোনও রকম দুর্নীতিতে যুক্ত হইনি জীবনে। ২৫ বছর ধরে চেতলার কাউন্সিলর। একজন বলুন, ববি হাকিমকে পয়সা দিয়েছেন। আমি ইস্তফা দিয়ে চলে যাব। একজন ঠিকাদার, বিল্ডার একজন বলুন। পাপ করেছি মানুষের সেবা করে। নিজের ব্যবসার টাকায় সেবা করেছি। খালি বলছে দুর্ক্তনীতির সঙ্গে সংযোগ। কী সংযোগ। বিচারপতি অমৃতা সিন্হা কেন প্রশ্ন করবেন না যে কী পেলেন রিলেটেড? আইন অনুযায়ী তো কিছু ছিল না। কী সংযোগ পেলেন? কে অয়নশীল, চিনিও না। কেন বার বার করে হেনস্থার স্বীকার হব। সারা জীবন একটা আদর্শ, নীতি নিয়ে রাজনীতি করেছি। কোনও দিন জীবনে অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত হইনি। নিজে কোনও ফূর্তি করিনি। কখনও নেশা করিনি। মানুষের সেবা করতে এসেছি।"