ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে আক্রমণ করতে গিয়ে সরাসরি এবিপি আনন্দকে নিশানা করেছিলেন বাংলাদেশের বিএনপি নেতা। এবিপি আনন্দ-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে-কে হুঁশিয়ারি দিতেও ছাড়েননি। তিনি বাংলাদেশের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সচিব রুহুল কবীর রিজভী। বৃহস্পতিবার  আরও  একবার ভারতের প্রতি তাঁর চরম ঘৃণা প্রকাশ করতে নাটকীয় ভাবে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দিলেন।  খালেদা জিয়ার দলের এই নেতাকে দেখা গেল , সকলের সামনে তাঁর স্ত্রীর ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে দিতে। এভাবেই পেঁয়াজ - লঙ্কা হোক বা আলু - পেঁপে, ভারত থেকে আসা সবকিছুই বর্জনের ডাক জানালেন। কিন্তু একটা শাড়ি পুড়িয়ে মুছে ফেলতে পারলেন কি, সুদীর্ঘ ইতিহাস, একটা দেশের জন্মের প্রেক্ষাপট ? এই প্রশ্নটাই একেবারে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য দিয়ে বাংলাদেশের এই রাজনীতিকের দিকে ছুড়ে দিলেন, এবিপি আনন্দ-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে।  


পূর্বে ট্যইটার, অধুনা এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখলেন, ' প্রথমে ভিত্তিহীন অভিযোগ করে, এবিপি আনন্দকে আক্রমণ করলেন। তারপর স্ত্রীর কেনা একটা ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে, ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাক দিলেন বাংলাদেশের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সচিব রুহুল কবীর রিজভী। কিন্তু আজ, অর্থাৎ ৬ ডিসেম্বরের ইতিহাসটা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে ভোলাতে পারবেন তো রুহুল সাহেব? কারণ এটাই তো সেই ইতিহাস, যেখানে ভারত সর্বশক্তি দিয়ে আপনার প্রিয় দেশকে, আপনারই বাংলাদেশকে, পাকিস্তানের থাবা থেকে বের করে এনে, স্বাধীন করে, পদ্মাপারে সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল! আজ তো সেই ৬ ডিসেম্বর, যেদিন আমাদের ভারতবর্ষ, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল! যার জেরে পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পর্য়ন্ত ছিন্ন করেছিল! আর আজ এই অস্থির সময়ে সেই পাকিস্তানের সঙ্গেই মাখামাখি করে, আপনারা ভারতকে বয়কটের ডাক দিচ্ছেন রুহুল সাহেব! আসলে আপনিও জানেন, স্ত্রীর আলমারি থেকে একটা শাড়ি বের করে এনে পোড়ানোটা সহজ... কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস থেকে ভারতকে বাদ দেওয়াটা কোনওদিন সম্ভব নয়। কারণ শাড়ি পোড়ানো যায়, ইতিহাস নয়। কিন্তু উগ্র ভারত-বিরোধিতার আগুন না জ্বালালে যে, আপনাদের রাজনীতির রুটি সেঁকা হবে না! আর তার জন্য ইতিহাসকে অস্বীকার করতে হলেও আপনারা করবেন! আসলে কী জানেন রুহুল সাহেব, যে আগুন আপনারা আজ জ্বালাতে চাইছেন, সেই আগুন কিন্তু কোনও রং, কোনও সম্প্রদায় দেখে না, হিংসার আগুন সর্বগ্রাসী। ইতিহাস সাক্ষী, দেশ-কাল ভেদে, ধর্মান্ধতার আগুনে পোড়ে শুধু মানবতা…'  


এর আগে, বাংলাদেশে লাগাতার হিন্দু-নিপীড়ন সংক্রান্ত খবরের করায়,  এবিপি আনন্দর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্টের নাম টেনে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রিজভী। জবাবও পেয়েছিলেন মোক্ষম। সুমন দে স্পষ্ট তাঁকে জানিয়ে দেন, 'আমাদের এই চ্যানালের ট্যাগ লাইন...সীমানা। যেখানে গণতন্ত্র-মানবাধিকার আক্রান্ত হয়, আমরা সীমা দেখি না। আমরা সমালোচনা করি। ক্ষমতায় কে আছেন, আর বিরোধী চেয়ারে কে বসছেন আমরা দেখি না। দেশের মধ্যেও দেখি না, দেশের বাইরে তো দেখিই না। ' আবারও শাড়ি-পুড়িয়ে-বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা রিজভীকে তথ্যসমৃদ্ধ বার্তা দিলেন এবিপি আনন্দ-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে।