সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আঁচ পড়েছে বাজারে। প্রায় সব সংস্থার ভোজ্য তেলের দামই লিটার পিছু ১৫ থেকে ২৫ টাকা অবধি বেড়েছে। ফলে মধ্যবিত্তের মাথায় হাত।


রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আঁচ পড়তে শুরু করেছে বাজারে। পেট্রোল-ডিজেলের পাশাপাশি বাজারে ভোজ্য তেলের দামেও আগুন। বুধবার লেক মার্কেটে গিয়ে দেখা গেল, বিভিন্ন সংস্থার ভোজ্য তেলের দাম গড়ে ১৫ থেকে ২৫ টাকা অবধি বেড়েছে। ভারতে সূর্যমুখীর তেলের ৮৫ শতাংশই রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে আমদানি করা হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে মাসে ২ লক্ষ টন তেল আমদানি করা হয় এই দুই দেশ থেকে। 


যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে পরিবহণের খরচ হু হু করে বেড়েছে। ইউক্রেন নিবাসী তেল ব্যবসায়ী শুভ্র চক্রবর্তী বলেন, "ওখানে এই মুহূর্তে কী পরিস্থিতি কেউ জানে না। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে জাহাজের ভাড়া এবং ইনসিওরেন্স অনেকটা বেড়েছে। ট্রান্সপোর্ট কস্ট বেড়েছে।"                              


তবে অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, যুদ্ধের প্রভাব পড়লেও, দাম বৃদ্ধির সেটাই একমাত্র কারণ নয়। অর্থনীতিবিদ সুমন মুখোপাধ্যায় বলেন, "নিশ্চয় প্রভাব পড়েছে। ম্যাক্সিমাম ওখান থেকে আসত। তবে সানফ্লাওয়ার তেল আসছে না বলে এমন নয়। এখানে হোর্ডিং হচ্ছে। সেটাও সরকারকে দেখতে হবে।" সব মিলিয়ে মধ্যবিত্তের কপালে চিন্তার ভাঁজ ক্রমশ গভীর হচ্ছে।               


এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ভোজ্যতেলের দামও ২০  শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ভোজ্যতেলে ঘাটতি সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানারকম তথ্য ভাইরাল হচ্ছে। আর এতেই ভয় বাড়ছে মধ্যবিত্তের।  রান্নার তেলের চাহিদার দুই-তৃতীয়াংশ আমদানি করা হয় এদেশে। কিন্তু ভোজ্য তেলের সঙ্গে যুক্ত শিল্পোদ্যোগীরা সরকারকে তারা নিশ্চিত করেছিল, আগামী দুমাস সানফ্লাওয়ার তেলের যোগানে কোনও ঘাটতি হবে না। তবে ইউক্রেন থেকে প্রচুর সানফ্লাওয়ার অয়েল ভারতে আমদানি করা হত।কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সেই আমদানির কী হবে?


এরই মধ্যে খাদ্য ও প্রক্রিয়াকরণ দফতরের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে শিল্পোদ্য়োগীরা একটি বৈঠক করেন। সেখানে আশার কথাই শোনান তাঁরা। শিল্পপতিরা বলেন, সানফ্লাওয়ার তেলের কোনও ঘাটতি নেই।  পাশাপাশি তাঁরা মন্ত্রীকে জানিয়েছেন, সানফ্লাওয়ার অয়েলের বিকল্প হিসাবে সরষের তেল ও সয়াবিন তেলও দেশে রয়েছে।