ঋত্বিক প্রধান, হংসরাজ সিংহ, করুণাময় সিংহঃ আবাস যোজনার টাকা নয় ছয় করা নিয়ে এবার তৃণমূলকে একহাত নিলেন সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষ। গলায় গামছা দিয়ে টাকা আদায়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সুশান্ত ঘোষ বলেন, ''গ্রামে যারা চুরি করে সম্পদের পাহাড় তৈরি করেছে, তাদের গলায গামছা দিয়ে পঞ্চায়েতের পরে টাকা আদায় করব।'' তিনি আরও বলেন, ''যে দলের নেতা, তাকে টাকা দিয়ে পদ নিতে হয়, আজ পঞ্চায়েতের সদস্য প্রার্থী হতে গেলে, তাকে টাকা দিয়ে প্রার্থী হতে হয়। পুরসভার প্রার্থী, এমএলএ, এমপি হতে হয় টাকা দিয়ে। তাই যে টাকা দিয়ে তারা পদ কেনে, সেই পদ কেনার পর, তারা কী করে তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা মজুত করেত হবে, নাহলে পরের নির্বাচনে তারা আরও বেশি টাকা দিয়ে পদ কিনতে পারবে না, তাই এদের দুর্নীতি করতে হয়। তৃণমূলের ছোট-বড়-সেজ সব নেতাই চোর। যদিও এই মন্তব্যে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল।''
আবাস যোজনায় পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগে তোলপাড় গোটা রাজ্য! কেন্দ্রের চাপে একদিকে যখন, যোগ্য দাবিদারদের তালিকা তৈরিতে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে নবান্ন। তখন তৃণমূলেরই একাধিক নেতার বিরুদ্ধে উঠছে আবাস যোজনায় কারচুপির অভিযোগ। ক্ষোভ বাড়ছে দলের অন্দরেও!!
এই প্রেক্ষাপটেই রাজ্যের শাসকদলকে নিশানা করে, ফের হুঁশিয়ারি দিলেন শুভেন্দু অধিকারীও। রবিবার এগরায় শুভেন্দু বলেছেন, আবাস যোজনায় ঘর পাইয়ে দিতে যদি তৃণমূল নেতারা টাকা নিয়ে থাকেন, তাহলে ১৫ দিনের মধ্যে তাঁদের থেকে টাকা ফেরাবেন তিনি। বিরোধী দলনেতা বলছেন, ''এরা নিজেরা লিস্ট করেছে, টাকা নিয়েছে লোকের কাছ থেকে। ১৮ সালের লিস্ট। এখন আশাকর্মী ও আইসিডিএস-দের মার খাওয়ার জন্য পাঠিয়েছিল। ২৮ তারিখের মধ্যে লিস্ট বের করানোর কথা। ৩১ তারিখের মধ্যে টাকা দেওযার কথা। যদি টাকা দেয়, আমি জনগণকে বলে যাচ্ছি নজর রাখতে, টাকা যদি নেয়, কেন্দ্রের টাকা ফেরত করানোর দায়িত্ব আমাদের। এখানেও বলে গেলাম, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ১৭ দফা গাইডলাইন ব্রেক করে একটা তোলামূলের নেতা যদি টাকা নেয়, ১৫ দিনের মধ্যে টাকা ফেরাব, নয়ত ক্রিমিনাল কেস করাব তাঁর বিরুদ্ধে।''
যদিও এই বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। দলের রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ''আবাস যোজনার ঘটনা প্রশাসনিক স্তরে তদন্ত হচ্ছে এবং যেখানে দুর্নীতি সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শুভেন্দুর চিন্তা না করলেও হবে। কিন্তু শুভেন্দু যে নারদার টাকা নিলেন, সেটা কবে ফেরত দেবেন?''
আবাস যোজনা নিয়ে একদিকে যখন তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএমের এই লড়াই চলছে, তখন কার্যত উলটপুরাণ দেখা গেল মালদায়। হরিশ্চন্দ্রপুরের কংগ্রেস পরিচালিত ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, এই পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান ও তাঁদের আত্মীয়দের নামও আবাস যোজনার তালিকায় রয়েছে। অবশেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রায় এক ঘণ্টা পর পঞ্চায়েতের তালা খুলে দেন বিক্ষোভকারীরা।