কলকাতা : তৃণমূলে যোগ দিলেন জয়প্রকাশ মজুমদার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দিলেন জয়প্রকাশ মজুমদার। দলে যোগ দিয়েই পদ পেলেন তিনি। এক সময় রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর জয়প্রকাশ মজুমদার পেলেন তৃণমূলের সহ-সভাপতি পদ। মঞ্চে দেখা গেল ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকেও। কয়েকদিন ধরেই পিকে-টিএমসির টানাপোড়েন নিয়ে নানা চর্চা হচ্ছিল। কিন্তু তরজাতেও ইতি পড়ল কিছুটা। 


এরপর বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, "রাজনৈতিক মঞ্চ ও মাঠে অনস্বীকার্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হচ্ছেন মেসির সমান। কোনও অস্বীকারের জায়গা নেই। আমি আগে কংগ্রেস করতাম। মাঝে আমি বিজেপিতে যোগদান করি। সেই সময় বিজেপির ৪ থেকে ৫ শতাংশ মত ভোট ছিল। সেদিক থেকে আমাকে সুযোগসন্ধানী বলতে পারবে না। আমি তৃণমূলে এসেছি বাংলার অস্মিতাকে বজায় রাখা, বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এক অসামান্যা নারীর সঙ্গে যুক্ত হতে পেরেছি।"


তিনি আরও বলেন, "তৃণমূলের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছে কি না তা এখন বলার কোনও মানে নেই। আমি বিজেপি পার্টি ছেড়ে আসিনি। দলই আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল। আমি আমাদের নেতাদের সঙ্গে মিটিং করেছি রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছি। কারা কোথায় কী সিদ্ধান্ত নেবেন তা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেবেন। আমি যোগ দেওয়ার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে পদ আমায় দিয়েছে এর জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। নিয়ম কানুন জলাঞ্জলি দিয়ে কাজ করছে বিজেপি। ভিক্ষাপত্রের ওপর নির্ভর করে রাজনৈতিক জীবন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় না।"  


২০১৪ সালে, কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন জয়প্রকাশ মজুমদার। এরপর তাঁকে রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি করা হয়। ২০১৯’এর করিমপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে জয়প্রকাশ মজুমদারকে প্রার্থী করে বিজেপি। তখন, তৃণমূলের কাছে হেরে যান জয়প্রকাশ। সুকান্ত মজুমদার দায়িত্ব নেওয়ার পর, রাজ্য বিজেপিতে বড়সড় রদবদল হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে সহ সভাপতি থেকে সরিয়ে তাঁকে মুখপাত্র করে বিজেপি। তারপর থেকেই দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেন জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারি। এরপরই, দু’জনকে শোকজ করে বিজেপি । 


বিজেপি থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পর, কেন্দ্র ও রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে বারবার সুর চড়ান জয়প্রকাশ মজুমদার। সেই সঙ্গে দলের ত্রুটি বোঝাতে গিয়ে, তিনি তুলনা টানেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তিনি ২৫ জানুয়ারি মন্তব্য করেছিলেন, ' লড়াই হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যাঁকে সারা ভারতে এখন মনে করা হয়, অত্যন্ত কুশলী স্ট্র্যাটেজিস্ট, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নেত্রী। এবার আমি মেসির টিমের সঙ্গে খেলতে নামব তিনদিন প্র্যাকটিস করে?' শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারিকে শোকজ করে রাজ্য বিজেপি। উত্তর দেওয়ার আগেই তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।