কলকাতা: বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ইস্তফাও দাবি করলেন ফের। সরাসরি রাজ্যাল সিভি আনন্দের দ্বারস্থ হয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য, "গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সুপারিশ করুন রাজ্যপাল। ভোট দিয়ে মানুষ পছন্দের সরকার পছন্দ করুক।" (Suvendu Adhikari)


আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আজ পশ্চিমবঙ্গ 'ছাত্র সমাজে'র ডাকে নবান্ন অভিযান ছিল, যাকে ঘিরে সকাল থেকে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়। সাঁতরাগাছি, হাওড়া ব্রিজ, হাওড়া ময়দানে দফায় দফায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে পুলিশের। পুলিশকে ঘিরে এলোপাথাড়ি ইঁটবৃষ্টি চলে, পাল্টা লাঠিচার্জ করে, জলকামান দেগে এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে ভিড় ছত্রভঙ্গ করা হয়। (CV Ananda Bose)সন্ধেয় আবার ডোরিনা ক্রসিংয়ে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের ডাকে অবরোধ শুরু হয়। লাঠিচার্জ করে সেখান থেকে সকলকে হটিয়ে দেয় পুলিশ।


আজকের নবান্ন অভিযান থেকেও স্লোগান ওঠে 'দফা এক, দাবি এক, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ' বলে। আর সেই আবহেই আবারও মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে মমতার পদত্যাগের দাবি তুললেন শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য, "আমি চাইব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে, বিশেষ করে পুলিশ এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করুন উনি। রাজ্যপালকে অনুরোধ করব, আপনি রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশ করুন। পশ্চিমবঙ্গে গুন্ডা, ধর্ষকরা জেলে যাক, ফাঁসি হোক। গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসুক। গণতান্ত্রিক পরিবেশে, জনগণ নির্ভয়ে পছন্দের দলকে গ্রহণ করুন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা হোক রাজ্য।" (Nabanna Abhijan)


এ নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেন তৃণমূলের কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, "বিচার নয়, ওরা চেয়ার চায়। বিচার চাইলে তো সিবিআই, সিজিও কমপ্লেক্সে যেতে হয়। কিন্তু বিচারে তো আর নেই বিষয়টি। এরা রাজ্যে নৈরাজ্য তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে।" ফিরহাদ হাকিম বলেন, "ওই তো! পিছন দিয়ে ঢোকার চেষ্টা!  আহা! কে রাজ্যপাল? আমরা মানুষের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে এসেছি।"


এদিনের নবান্ন অভিযানের পর, বিকেলে বিজেপি নেতৃত্বও লালবাজার অভিযানে বেরোন। রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সেই অভিযানে নেতৃত্ব দেন। এই লালবাজার অভিযান ঘিরেও চূড়ান্ত অশান্তি দেখা দেয়। সেই আবহেই বুধবার রাজ্য জুড়ে ১২ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বিজেপি। এর পাশাপাশি, বৃহস্পতিবার থেকে লাগাতার ধর্নার প্রস্তুতি নিচ্ছে গেরুয়া শিবির। আদালত থেকে অনুমতি পেলে বৃহস্পতিবার থেকে ধর্না শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সুকান্ত। তাঁর অভিযোগ, আজ নবান্ন অভিযান ঘিরে পুলিশ ও প্রশাসনকে সামনে রেখে সংগঠিত অত্যাচার চালানো হয়েছে।


তৃণমূল যদিও সাফ জানিয়েছে, বুধবার কোনও ধর্মঘট হবে না। দলের নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, "কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না, ব্যর্থ করুন ধর্মঘট। নবান্ন অভিযান নয়, আজ সমাজবিরোধীদের অভিযান ছিল।" পাশাপাশি, বিজেপি এবং সিপিএম-এর ক্যাডাররা যৌথ ভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন কুণাল।