কলকাতা : একদিকে তৃণমূলের দিল্লি চলো অভিযান, দিল্লিতে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রকে অভিষেকের লাগাতার নিশানা, গিরিরাজ সিংহকে গ্রেফতারের দাবি, আর অন্যদিকে ঠিক সেই সময়ই বাংলায় প্রকল্পে বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য গিরিরাজ ও মোদিকে ধন্যবাদ জানালেন শুভেন্দু অধিকারী। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি পোস্ট করেছেন, 'বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য নরেন্দ্র মোদি ও গিরিরাজ সিংহকে ধন্যবাদ'। 


সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেন্দু পোস্ট করেন, 'বাংলায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য নরেন্দ্র মোদি ও গিরিরাজ সিংহকে ধন্যবাদ। ১০০ দিনের প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে' । সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে শুভেন্দু অধিকারী আরও লেখেন, 'ইউপিএ-এনডিএ আমলের সঙ্গে যদি তুলনা হয়, তাহলে মোদি সরকারের আমলে বাংলার জন্য বরাদ্দ অনেক বেশি' 


শুভেন্দু লেখেন, 'ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি ও মাননীয় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত রাজ মন্ত্রী শ্রী
গিরিরাজ সিংহকে।  MGNREGA (মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট), প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা (PMGSY) এর মতো রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের স্কিমগুলি বাস্তবায়নের জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে কেন্দ্রীয় তহবিলের বরাদ্দ যথেষ্ট পরিমাণে বাড়ানোর জন্য। যদি ইউপিএ এবং এনডিএ শাসন কালে পশ্চিমবঙ্গকে দেওয়া তহবিলের তুলনা করা হয়, তাহলে এটা স্পষ্ট হবে যে মোদি সরকার কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বহুগুণ বাড়িয়েছে। শুধু যদি এই টাকা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার ও প্রশাসন বাংলার গ্রামের মানুষের কাজে ঠিক মতো ব্যবহার করত...' 






আবার অন্যদিকে, বৃষ্টিতে মাটির বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে বিষ্ণুপুরে তিন  শিশুর মৃত্যু ও  বীরভূমের লাভপুরে দেওয়াল ভেঙে  বৃদ্ধের মৃত্যুর পর তার দায় প্রধানমন্ত্রী ও গিরিরাজ সিংহের উপর চাপিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ! এই সমস্ত ঘটনাকেই, মোদি সরকারের বিরুদ্ধে আবাস যোজনার টাকা আটকে রাখার অভিযোগের সঙ্গে জুড়ে, সুর সপ্তমে তোলে তৃণমূল! এমনকী সন্তানহারা বাবাকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লি যাওয়ার আগে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রীকে গ্রেফতারির দাবি তুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যুর দায় কার? বিচার ব্যবস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। এই মৃত্যুর দায় মোদি-শাহের। প্রশাসনের কাছে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আর্জি জানাচ্ছি। গিরিরাজ সিংহকে গ্রেফতার করা উচিত। যাঁরা টাকা আটকে রেখেছে তাঁদের গ্রেফতার করা উচিত। ' 


কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে দিল্লিতে পৌঁছেছেন তৃণমূলেন নেতানেত্রীরা আর জেলা জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ। সোমবার থেকেই তাদের দু'দিনের কর্মসূচি শুরু। দুপুর ১টায় অভিষেকের নেতৃত্বে রাজঘাটে যাবেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী-সাংসদরা।  জন্মদিনে গান্ধীজিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর নামাঙ্কিত মনরেগায় বকেয়া নিয়ে দিল্লিতে সরব হবে রাজ্যের শাসকদল। ২ ঘণ্টা ধরে রাজঘাটে চলবে তৃণমূলের প্রতিবাদ। 'বাংলাকে বঞ্চনা অথচ কোটি কোটি টাকা খরচ করে নতুন সংসদ ভবন কেন?' এই প্রশ্ন তুলে ছাত্র-যুবদের নেতৃত্বে ভুক্তভোগীদের নিয়ে আজ নতুন সংসদ ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছে তৃণমূল।


রবিবার নেতা-মন্ত্রী-সাংসদদের বৈঠকে অভিষেক জানান, কেন্দ্রীয় বঞ্চনার জেরে মানুষের জীবন কতটা বিপর্যস্ত, নবজোয়ার কর্মসূচির সময় তিনি উপলব্ধি করেছেন। তখনই দিল্লিতে গিয়ে প্রতিবাদের সিদ্ধান্ত, বৈঠকে জানান অভিষেক। যদিও যন্তর মন্তরে তৃণমূলের আগামীকালের প্রতিবাদ কর্মসূচির জন্য লিখিত অনুমতি দেয়নি দিল্লি পুলিশ। সোমবার বিকেলে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে অভিষেকের নেতৃত্বে ফের বৈঠকে বসবে তৃণমূল নেতৃত্ব। আলোচনা করে ঠিক করা হবে মঙ্গলবারের কর্মসূচি।