কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি-তদন্তে (SSC Scam) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও (Mamata Banerjee) জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত বলে এ বার মন্তব্য করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর কথায়, মুখ্যমন্ত্রীও আইনের ঊর্ধ্বে নন। প্রয়োজনে নবান্নে (Nabanna) গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত গোয়েন্দাদের, দাবি শুভেন্দুর।
মমতা আইনের ঊর্ধ্বে নন, দাবি শুভেন্দুর
নিয়োগ দুর্নীতিতে সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন পলাশীপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। তদন্তে তাঁর হোয়াসঅ্যাপ চ্যাটের রেকর্ডকে হাতিয়ার করছেন তদন্তরকারীরা। তাতে RK নামের জনৈক ব্যক্তির সঙ্গে মানিকের কথোপকথন মিলেছে বলে জানা গিয়েছে ইডি সূত্রে। বলা হয়েছে, DD তালিকায় অনুমোদন দিয়েছেন, এমন কথোপকথনও রয়েছে। এই DD এবং RK-র পরিচয় নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। এমনকি মানিকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা একটি চিঠিও পাওয়া গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সেই প্রসঙ্গেই এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি তোলেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে অ্যাড্রেস করা যে চিঠির কথা কেস ডায়েরিতে উল্লেখ করেছে ইডি। এতে খুব পরিষ্কারভাবে প্রমাণ হচ্ছে দু’টো জিনিস, হোয়াটসঅ্যাপে ডিডি, আর মুখ্যমন্ত্রীকে অ্যাড্রেস করে লেখা চিঠি। তো সেখানে বলা হচ্ছে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের একজন সাধারণ সম্পাদক, যিনি ৪৪টি চাকরির জন্য ৩ কোটি ৮ লক্ষ টাকা তুলেছেন।’’
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘ক্লাবকে অনুদান কেন প্রশ্ন করেন যাঁরা...পুজোয় ৫০ হাজার কোটি আয়’, বললেন মমতা
এর পরই শুভেন্দু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, এই দুর্নীতির সঙ্গে ষড়যন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আইনের ঊর্ধ্বে নন। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। মুখ্যমন্ত্রী পদমর্যাদায় রয়েছেন। প্রয়োজন হলে নবান্নে গিয়ে বা তাঁর নির্দিষ্ট করে দেওয়া জায়গায় গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। প্রয়োজনে প্রশ্ন পাঠানো উচিত ইমেলে। এজেন্সিকে তদন্ত করতে যারা বলেছে, জুডিসিয়ারি, তাঁদের কাছে এই আবেদন করব।’’
শুভেন্দুর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃমমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘উনি যে এ কথা বলছেন, যে এই পাওয়া গিয়েছে, তাতে এই লেখা রয়েছে, সেটি আদালতে পেশ করার আগে, পাবলিক ডোমেইনে আসার আগে শুভেন্দু অধিকারী জানছেন কী করে? এটা আরও অনেক বড় তথ্য, সামনে আসা দরকার। আমি দেখেছি, রাজভবনে আগের রাজ্যপাল থাকার সময় কী ভাবে শুভেন্দুর সঙ্গে ইডি এবং সিবিআই-এর বিভিন্ন আধিকারিকরা দেখা করতেন। সেটাকে সেফ হাউস বলে মনে করতেন। এখনও সেই প্রক্রিয়া চলছে কিনা দেখা দরকার। কেন্দ্রীয় সংস্থার তথ্য বলে যা জানা যাচ্ছে, সেই তথ্য শুভেন্দু পাচ্ছেন কী করে, তা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।’’
তদন্তে মানিকের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটকে হাতিয়ার করছে ইডি
নিয়োগ দুর্নীতিতে পার্থ-অর্পিতা-সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে দেওয়া ইডি-র চার্জশিটে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর নাম। নিয়োগকাণ্ডে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জড়িত থাকার প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে চার্জশিটের ছত্রে ছত্রে মানিক ভট্টাচার্যর যোগসূত্রের কথা উল্লেখ করে ইডি। চার্জশিটে ইডি-র দাবি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তাঁর ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি মানিক ভট্টাচার্যর বিরুদ্ধে বেসরকারি কলেজ থেকে টাকা তোলা, হুমকি দেওয়া, ইন্টারভিউয়ে প্রাপ্ত নম্বরের উল্লেখ ছাড়া নদিয়ার টেটের মাস্টার শিট চেয়ে চেয়ারম্যানকে চাপ দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ তুলে মেসেজ করেন। মানিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার বদলে তাঁকেই অভিযোগ সম্বলিত মেসেজটি ফরোয়ার্ড করে দেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। DD ও RK’র পরিচয় সম্পর্কে মানিককে তদন্তকারীরা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন বলেও জানা গিয়েছে।