নন্দাগ্রাম: সিঙ্গুর আন্দোলন নিয়ে তৃণমূলকে (TMC) কাঠগড়ায় তুলেছেন আগেই। এ বার সরাসরি সিপিএম-এর (CPM) ভূয়সী প্রশংসা শোনা গেল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) মুখে। সিপিএম-এর (CPM) সবাই খারাপ নন বলে মন্তব্য করলেন তিনি। একই সঙ্গে জানালেন, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর পক্ষে সিপিএম-এর বহু কর্মীই ভোট দিয়েছেন (Nandigram)।
সিপিএম-এর সবাই খারাপ নন, নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে বললেন শুভেন্দু
শনিবার শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস ঘিরে নন্দীগ্রামে ফের তৃণমূল-বিজেপি মুখোমুখি সংঘাতে জড়িয়েছে। তার মধ্যেই স্মরণসভার মঞ্চ থেকে সিপিএম-এর ভূয়সী প্রশংসা করলেন শুভেন্দু। তিনি খেটেছিলেন আর তাঁর পরিশ্রমের ফল আজ 'পিসি-ভাইপো' খাচ্ছেন বলে আক্রমণ শানান। এর পরই সরাসরি সিপিএম-এর প্রশংসা করেন।
এ দিন শুভেন্দু বলেন, "এদের থেকে অনেক বড় এবং শক্তিশালী সংগঠন ছিল সিপিএম-এর। বামফ্রন্ট এদের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল। ক্ষমতায় ছিল ৩৪ বছর। আসনসংখ্যা ছিল ২৩৫। আপনাদেরকে সঙ্গে নিয়ে অন্যায়, অত্যাচার সামলেছেন লক্ষ্মণ সেনরা। বামপন্থীরা সবাই খারাপ নন। আমাদের সঙ্গে প্রচুর বামপন্থী এসেছেন। নন্দীগ্রামে বামপন্থীদের একটা বড় অংশ, যাঁরা হিন্দু, আমাকে ভোট দিয়েছেন বলেই জিতেছি। অকপটে স্বীকার করছি সে কথা।"
তবে শুভেন্দুর কাছ থেকে কোনও রকম শংসাপত্রের প্রয়োজন তাঁদের নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। এবিপি আনন্দে তিনি বলেন, "শুভেন্দুকে কে সার্টিফিকেট দিতে বলেছে? সার্টিফিকেট দেওয়া তাঁর সাজে, যাঁর সার্টিফিকেট দেওয়ার যোগ্যতা রয়েছে। তৃণমূলের বড় নেতা দলবদল করে বিজেপি হয়েছেন। তাঁর সার্টিফিকেটের মূল্য তৃণমূলের কাছে থাকলেও, বামপন্থীদের কাছে নেই।"
এ দিন শুভেন্দু তো বটেই, তৃণমূল এবং বিজেপি-কে এক আসনে বসিয়েও কটাক্ষ ছুড়ে দেন সুজন। তিনি বলেন, "তৃণমূলে থাকাকালীন বলেছিলেন, 'লালঝান্ডা ধরার কেউ থাকবে না, এমন ব্যবস্থা করব'। তাতে উনি ব্যর্থ হয়েছেন। আজ পট পট করে লালঝান্ডা উঠছে। তাই ভয় পাচ্ছেন। নিজের স্বার্থেই নরম সুরে কথা বলছেন তাই। তৃণমূলও নিজের স্বার্থে কখনও সুর নরম করে, বিজেপি-ও তৃণমূলের বিরোধিতা করতে গিয়ে স্বরণ করে সিপিএম-কে। লালঝান্ডা তুলতে দেবে না বলে যে আস্ফালন ছিল এতকাল, সেই জোর হারাচ্ছে দুই দলই। আমাদের কারও সার্টিফিকেটের দরকার নেই।"
শুভেন্দুর কাছ থেকে সার্টিফিকেটের প্রয়োজন নেই, পাল্টা সুজন চক্রবর্তী
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, "আজ সকাল সওয়া ৬টায় আমি যে অভিযোগ প্রকাশ্যে করেছি, এক ঘণ্টা পর তা স্বীকার করলেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেছিলাম, সিপিএম-এর হার্মাদদের ভোটই বিজেপি-তে গিয়ছে। অর্থাৎ সিপিএম-এর হার্মাদরা এখন বিজেপি সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেটাই স্বীকার করে নিচ্ছেন শুভেন্দু। এলাকার ভূমি উচ্ছেদ কমিটির মানুষরাও বলছেন, যাঁরা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ ছিল, তাঁরা আজ বিজেপি-র পতাকা নিয়ে শহিদ বেদিতে মালা দিতে যাচ্ছেন। বিজেপি-কে ভোটটা দিয়ে দিচ্ছে সিপিএম। শুভেন্দু একই কথা বলছেন। অর্থাৎ শুভেন্দুর কাছে সিরিএম খারাপ নয়। সেই সময় শুভেন্দু যে খাল কেটে সিপিএম-কে নন্দীগ্রামে ঢোকান, তার তদন্ত হওয়া উচিত।"