কলকাতা: এনসিসি-র ফান্ড বিতর্কে এ বার মুখ খুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। দুর্গাপুজোয় ক্লাবগুলিকে ২৬০ কোটি টাকা দিলে, এনসিসি-র (NCC) বেলায় কেন ২০ লক্ষ টাকা, প্রশ্ন তুললেন তিনি। শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকার 'ভিখারি' হয়ে গিয়েছে বলেও কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন। শীঘ্র রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন বন্ধ হয়ে যাবে বলেও দাবি করলেন।
বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু বলেন, "রাজ্য আর্থিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। লজ্জা করে না অর্থমন্ত্রীর! বলছেন, ২০ লক্ষ দিয়েছেন। এনসিসি-র ২০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন! পুজোয় তো ২৬০ কোটি টাকা দেওয়া হয়! আসলে এরা চায়, পিএফআই থাকুক, এনসিসি নয়। কোথাও চাকরি নেই। ৪০ হাজার স্থায়ী নিয়োগে বলছে দিতে পারবে না। বেতন বন্ধ হবে, চিন্তা নেই। একদম ভিখারি সরকার।"
এ নিয়ে যদিও শুভেন্দুকে একহাত নেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, "কাকে কত টাকা দিতে হবে, সরকার কত টাকা দেবে, এনসিসি-র জন্য কত টাকা খরচ করবে, তার জন্য় ওঁকে কৈফেয়ত দিতে হবে, এমন জায়গায় নেই উনি। খরচ সংক্রান্ত তথ্য হাতে পেলে যে টাকা দেওয়ার দেব। উনি চাকরি বন্ধ হবে বলছেন। সব জেনে ফেলেছেন। ইতিহাস তো পাল্টেই ফেলছেন! কিন্তু আমাদের ২৫-এর উপর ওঁদের ৭৫ কেন নির্ভর করছে! ওঁরা ৭৫টা দিয়ে দিন না আগে!"
উল্লেখ্য, সেনায় নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ National Cadet Corps বা এনসিসি-র ক্যাম্প এবং প্রশিক্ষণ। এনসিসি-তে ভাল নম্বর থাকলে এবং স্নাতকস্তরে ৫৫ শতাংশের বেশি নম্বর থাকলে, সেই প্রার্থীকে আর Combined Defence Services বা CDS-এর লিখিত পরীক্ষায় বসতে হয় না। সরাসরি ইন্টারভিউতে বসার সুযোগ পান।
এই এনসিসি-র ২৫ শতাংশ টাকা দেয় রাজ্য সরকার। ৭৫ শতাংশ টাকা কেন্দ্রীয় সরকার দেয়। রাজ্য সরকার ২৫ শতাংশ টাকা দেওয়ার পর, বাকি টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে টাকা না দেওয়ার অভিযোগ। তাতে রাজ্যে নতুন ক্যাডেট নিয়োগ ও ক্যাম্প করা বন্ধ করে দিয়েছে এনসিসি। তাদের দাবি, রাজ্য সরকার বিগত দুই বছর ধরে টাকা দিচ্ছে না। বকেয়া রয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। চিঠি দিয়ে সমস্যার কথা এনসিসি-র DG-কে জানিয়েছেন রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত ADG। DG সেই চিঠি প্রতিরক্ষামন্ত্রককে পাঠিয়েছে।
তবে এ নিয়ে রাজ্যের যুক্তি হল, এনসিসি-কে গত ২১ তারিখই অর্থ দেওয়া হয়েছে। ২০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে তাদের। কিন্তু অর্থ পেলেও, সেই খরচের হিসাব সরকারকে দেয়নি এনসিসি। এখন মিথ্যে অভিযোগ আনা হচ্ছে বলে দাবি করেন খোদ চন্দ্রিমা। পঞ্চায়েত-সহ বিভিন্ন খাতে কেন্দ্রীয় সরকার অর্থ আটকে রেখেছে বলেও দাবি করেন তিনি।