কলকাতা: ভবানীপুরে 'বহিরাগত' বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। সাধারণ মানুষ নন, বিজেপি-কে 'বহিরাগত' বলেছেন বলে পরে ব্যাখ্য়াও দেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরে দাঁড়িয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ভবানীপুরকে 'মিনি ইন্ডিয়া' বলে উল্লেখ করে জানালেন, ভবানীপুর বিজেপি-রই জায়গা, যা তারা ধরে রাখবে। (Suvendu Adhikari)
সপ্তাহ দুয়েক আগে বিজয়া সম্মিলনীতে ভবানীপুরে 'বহিরাগত' বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন মমতা। পরে ব্যাখ্য়া দিয়ে বলেন, "বহিরাগত বলতে এখানে যাঁরা বাস করেন, তাঁদের কথা বলিনি। আসলে কাউন্সিলরদের বকছিলাম যে তোমরা কেন বস্তিগুলি উঠিয়ে বাংলার বাড়ি করছো না। বহিরাগত আমি একটি রাজনৈতিক দলকে বলেছি, যারা বাইরের লোক এনে এখানে আমাদের নামের পাশে বসিয়ে দেয় ১০টা করে। অর্থাৎ আমাদের এখানকার ভোটাররা যাতে ভোট দিতে না পারেন। নির্বাচনের নাম করে বহিরাগতরা চলে আসেন, হোটেল-গেস্ট হাউস ভাড়া করে। যাদের অনেক টাকা আছে, ফ্ল্যাট কিনে নেয়।" (Suvendu in Bhowanipore)
সেই ভবানীপুরে দাঁড়িয়েই রবিবার কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন শুভেন্দু। তাঁকে বলতে শোনা গেল, "আমাদের তথাগত রায়, শিক্ষাবিদ, ত্রিপুরার রাজ্যপাল হয়েছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি এখান থেকে ৪০০ ভোটের লিড নেন। এটা হচ্ছে মিনি ইন্ডিয়া...নানা ভাষা নানা মত নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান। ভবানীপুরে শিখ, সিন্ধি, মাড়োয়ারি, বিহার-উত্তরপ্রদেশের হিন্দিভাষী, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, উৎকল, গুজরাতি, রাজস্থানের সব জেলার মানুষ রয়েছেন। সেই সঙ্গে আছেন বাঙালিরা। ধর্ম বাঁচাতে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা হিন্দু বাঙালিরা রয়েছেন এখানে। বর্ধিষ্ণু পরিবার, শিক্ষিত মানুষ আছেন। এটা বিজেপি-র জায়গা। অতএব এই জায়গা ধরে রাখার কাজ করবে বিজেপি। বিজেপি এখানে আছে। কালীঘাটের কাছে...ওয়াকিং ডিসট্যান্স। কয়েকশো মিটার হাঁটলেই পৌঁছনো যাবে। ইয়ে তো পহেলে ঝাঁকি হ্যায়, অভি বহুত বাকি হ্যায়। পোস্টার ব্যালট গোনা চলছে, ইভিএম-এ হাত পড়েনি এখনও। লাফিয়ে গিয়েছিলেন নন্দীগ্রামে আমাকে হারাতে। আমি ওঁকে হারিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। মরে গেলে উপনির্বাচন হয়। উনি শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে খড়দহ পাঠিয়ে, নিজে ছাপ্পা মেরে এখানে জিতেছেন।"
সোমবারই পশ্চিমবঙ্গে SIR শুরুর নির্ঘণ্ট ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। সেই নিয়ে শুভেন্দু বলেন, "আপনারা জোট বেঁধে কাজ করুন। সংবাদমাধ্যমে দেখলাম, কাল SIR-এর ঘোষণা করতে পারে কমিশন। আপনারা প্রস্তুত তো! বাড়ি বাড়ি BLO-রা যাবেন। মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্র। BLO-রা চাপে থাকবেন। ভয় পাবেন না। চারটি WBCS অফিসার সাসপেন্ড হয়েছে। এফআইআর পেন্ডিং। আরও দু'জন সাসপেন্ড হওয়ার পথে। বিচার-বিবেচনা চলছে। আগে এসব করেনি কমিশন।"
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে মমতা এবং শুভেন্দুর মধ্যে জোর টক্কর দেখেছিলেন রাজ্যবাসী। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভবানীপুর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জল্পনা উস্কে দিয়েছেন শুভেন্দু। এবার সেই ভবানীপুর থেকে যে বার্তা দিলেন তিনি, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।