তমলুক (পূর্ব মেদিনীপুর) ও কলকাতা: ভবানীপুর উপনির্বাচন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তমলুকের সভা থেকে মমতাকে আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেছেন, ‘যাঁর জন্য বহু মানুষ ঘরছাড়া, তাঁকে ভোট দেবেন, নাকি যিনি ঘরছাড়াদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাঁকে ভোট দেবেন? ভবানীপুরের ভোটারদের এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
মমতার ভগবানের জ্যেষ্ঠপুত্র-আক্রমণেরও জবাব দিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি বলেছেন, আমার নাম দিয়েছেন ভগবানের জ্যেষ্ঠপুত্র। আসলে প্রচণ্ড যন্ত্রণা থেকে এসব কথাবার্তা। কোনওদিনও ভুলতে পারবেন না যে, শুভেন্দুর কাছে হেরেছেন। এই যন্ত্রণা নিয়েই চলতে হবে। মাথা থেকে এ কথা কোনওদিন বের করতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে ভবানীপুর নির্বাচনের জন্য দলের প্রথম কর্মীসভায় বিরোধী দলনেতাকে হাইকোর্টের রক্ষাকবচ নিয়েও নাম না করে সরব হয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী।সম্প্রতি নারদকাণ্ডে ৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে ইডি। কিন্তু, তৃণমূলের প্রশ্ন, নারদের স্টিং অপারেশনে শুভেন্দু অধিকারীকেও, যখন দেখা যাচ্ছে, তখন তাঁর নাম কেন চার্জশিটে দিল না কেন্দ্রীয় এজেন্সি? গত বুধবার তৃণমূলনেত্রীও কারও নাম না করেই এ নিয়ে ঝাঁঝাল আক্রমণ শানান।দেহরক্ষীর খুনের মামলায় সোমবার শুভেন্দু অধিকারীকে তলব করেছিল সিআইডি। সেদিনই, সেই মামলা-সহ ৫ মামলায় বিরোধী দলনেতাকে রক্ষাকবচ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। নাম না করে সেই প্রসঙ্গ টেনেও সুর চড়ান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, আমাদের লোকেরা আপনাদের লোকের কাছে সাক্ষী দিতে যাবে। জেরা করবেন ১০ ঘণ্টা যাবে। আর আপনাদের লোকেদের যদি আমাদের কোনও এজেন্সি ডাকে, তার তথ্য থাকা সত্বেও, তার মার্ডার কেস থাকা সত্বেও, তখন আপনি আর্ডার কেস করিয়ে নিয়ে বলবেন, তার বিরুদ্ধে এফআইআরও করা যাবে না। কেন ভগবানের জ্যেষ্ঠপুত্র?
এদিন তমলুকের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে শুভেন্দু বলেছেন, তালিবানি-রাজের হাত থেকে বাঁচাতে গেলে কী করবেন, বেছে নিতে হবে ভবানীপুরের ভোটারদের।
শুভেন্দুর আক্রমণের জবাব দিয়েছেন সৌমেন মহাপাত্র। নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসনের ফলাফলের বিষয়টি বিচারাধীন আখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, এই জায়গায় দাঁড়িয়ে একজন বিরোধী দলনেতা এ ধরনের মন্তব্য করেন, তাহলে তা দুঃখজনক। মানুষই এর জবাব দেবেন।
তৃণমূল শাসনের তালিবানি শাসনের তুলনা করার তীব্র সমালোচনা করে সৌমেন মহাপাত্র বলেছেন, সংকীর্ণতম রাজনীতি থেকে এ সব কথাবার্তা বলছেন বিরোধী দলনেতা।এটা খুবই বেদনাদায়ক। তালিবান সম্বন্ধে ধারনা থাকলে তিনি এই মন্তব্য করতেন না। বরং তালিবানি রাজনীতির কিছু কিছু অংশের প্রকাশ দেখতে পাই কেন্দ্রীয় সরকারের পরিচালনার মধ্য দিয়ে।