কলকাতা: প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার (Tarun Majumdar Demise)। বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া চলচ্চিত্র মহলে। বর্ষীয়ান পরিচালকের প্রয়াণে পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় (Kamleshwar Mukherjee) বলেন, “বাঙালির কাছে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের দিন।  বাঙালির তারুণ্যের আলো চলে গেল। ঘরোয়া ছবি শুধু বানাতেন এই বিষয়টার বাইরে গিয়েই বলছি। একজন পরিচালকের গল্প বলার ধাঁচ অনেক বেশি শিক্ষণীয়। শুধুমাত্র পারিবারিক, ঘরোয়া বা প্রেমের ছবি নয়। শুরু করেছিলেন উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেনকে দিয়ে। তাপস পাল, ঋতুপর্ণা, প্রসেনজিৎকে নিয়ে কাজ করেছিলে। সংসার সীমান্তে বা গণদেবতার মতো সাহিত্য নির্ভর ছবিও করেছেন। পলাতকের মতো ছবিও করেছেন। এর পাশাপাশি আরেকটি বিষয়, কোনও অবস্থাতেই মতাদর্শগত অবস্থাতে কোনও দিন সরে আসেননি। আমাদেরও বলতেন, এমন ছবি করো যা সমাজের ক্ষতি না করে। সমাজ চেতনা যে তাঁর ছবিতে উঠে এসেছে, এটাও লক্ষণীয়। রবীন্দ্র সঙ্গীতের প্রয়োগও গুরুত্বপূর্ণ। নতুনদের সুযোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি কাজের ধারাকে বজায় রেখেছেন।’’


প্রয়াত তরুণ মজুমদার: গত ১৪ জুন থেকে এসএসকেএমে ভর্তি ছিলেন প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদার। অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল বর্ষীয়ান পরিচালককে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। সকালে গড়া হয় মেডিক্যাল বোর্ড। দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। দেখা দিয়েছিল বার্ধক্যজনিত সমস্যাও। অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল বর্ষীয়ান পরিচালককে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। আজ সকাল ১১টা ১৭ মিনিটে জীবনাবসান হয় তরুণ মজুমদারের। এসএসকেএম থেকে টালিগঞ্জের এনটি ওয়ান স্টুডিওতে নিয়ে যাওয়া হবে তরুণ মজুমদারের মরদেহ। সেখানে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন শিল্পী ও কলাকুশলীরা। মরদেহ নিয়ে শোকমিছিল হবে না। দেহদান করা হবে এসএসকেএমে, কর্নিয়া দান করা হবে শঙ্কর নেত্রালয়ে, জানিয়েছে প্রয়াত পরিচালকের পরিবার। 


১৯৩১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের বগুড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তরুণ মজুমদার। রসায়ন নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে পরবর্তীকালে চলচ্চিত্র পরিচালনাই পেশা হিসেবে বেছে নেন স্কটিশচার্চ কলেজের এই প্রাক্তনী। শচীন মুখোপাধ্যায় ও দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যৌথভাবে যাত্রিক গোষ্ঠীতে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ। প্রথম ছবি উত্তম-সুচিত্রা অভিনীত ‘চাওয়া-পাওয়া’। এরপর একের পর এক হিট ছবি তরুণ মজুমদারের ঝুলিতে। ‘বালিকা বধূ’, ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। শুধু ছবিই নয়, উপহার দিয়েছেন একের পর এক জুটি।  পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছেন তরুণ মজুমদার। পদ্মশ্রী সম্মানেও সম্মানিত হয়েছেন। তবে তাঁর সেরা প্রাপ্তি বাঙালি চলচ্চিত্রপ্রেমীদের ভালোবাসা।


আরও পড়ুন: Tarun Majumdar Death: তরুণ বাবুকে নিয়ে অসংখ্য অভিজ্ঞতা মনের মণিকোঠায় থাকবে: দোলন রায়