সন্দেশখালি, উত্তর ২৪ পরগনা: কেরল থেকে তড়িঘড়ি বাংলায় ফিরে সন্দেশখালি গেলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আর সেখানে পৌঁছতেই তাঁর পায়ে পড়লেন সেখানকার আতঙ্কিত মহিলারা। রাজ্যপালকে দেখেই অভিযোগ জানাতে থাকেন তাঁরা। রাজ্য়পালের সামনে হাতজোড় করে দাঁড়াতে দেখা গেল তাঁদের। এই প্রতিবাদের কারণে তাঁদের উপর আরও অত্য়াচার নেমে আসতে পারে বলে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সামনে আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন তাঁরা।
এদিন তিনি পৌঁছতেই ফুল ছড়িয়ে, শঙ্খ বাজিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয় রাজ্যপালকে। একের পর এক মহিলা এসে তাঁর কাছে অত্য়াচারের অভিযোগ জানাতে থাকেন। শেখ শাহজাহান এবং তাঁর সহযোগীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান তাঁরা। গ্রেফতার না করা হলে রাজ্যপাল চলে গেলে, তাঁদের উপর আরও অত্যাচার নেমে আসবে বলে আশঙ্কা জানিয়েছেন তাঁরা। রাজ্যপালের হাতে রাখিও পরিয়ে দেন তাঁরা।
কী বললেন রাজ্যপাল?
সবার অভিযোগ শোনেন রাজ্যপাল। যাবতীয় ব্য়বস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। গ্রামের মহিলাদের সুরক্ষিত রাখার জন্য়, নিরাপদে রাখার জন্য যা যা করার তিনি করবেন বলে জানিয়েছেন।
আতঙ্কিত মহিলাদের দাবি, রাজ্য পুলিশের উপর তাঁদের ভরসা নেই। সুরক্ষার জন্য় কেন্দ্রীয় পুলিশের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। সন্দেশখালিতে পুলিশের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগও উঠেছে। এদিন রাজ্যপাল পৌঁছনোর আগেই দেখা যায় রাস্তায় প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মহিলারা। কোনও প্ল্যাকার্ডে কেন্দ্রীয় পুলিশের দাবি জানানো হয়েছে। কোথাও রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে রয়েছে অভিযোগ। রাজ্যপালের পায়ের সামনে বসে পড়তে দেখা যায় মহিলাদের। রাজ্যপালের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে আন্দোলনকারীদের তরফে। কীভাবে মহিলাদের ডেকে পাঠানো হতো। কীভাবে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মুখ বুজিয়ে রাখা হতো, কীভাবে পরিবারের ক্ষতি করানোর ভয় দেখানো হতো, সবটাই রাজ্যপালের সামনে তুলে ধরেন তাঁরা। স্থানীয় পুলিশ কোনও অভিযোগ নেয় না বলে রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় মহিলারা। এক মহিলা বলেন, 'আমাদের মায়েদের শান্তির জন্য আপনারা কী চাইছেন জানি না। কিন্তু শেখ শাহজাহান, শিবু হাজরাদের না ধরলে আপনারা চলে গেলে আমাদের যে অবস্থা হবে তা আরও ভয়ঙ্কর হবে। আমরা এরপর মুখ তুলে তাকাতে পারব না। ১৩ বছর ধরে যা অত্যাচার হচ্ছে, তার থেকেও ভয়ঙ্কর হবে। ওরা যদি ফিরে আসে।'
সূত্রের খবর, ঘটনায় রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন রাজ্যপাল। কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে কথাও বলেছেন সি ভি আনন্দ বোস। এদিন সন্দেশখালি যাওয়ার আগে তিনি বলেন, 'শিউরে ওঠার মতো, বিধ্বস্ত করার মতো খবর শুনেই কেরল থেকে ফিরেছি।'