ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা : চাকরির দাবিতে নেমেছিলেন রাস্তায়। পুলিশের কামড় খেয়ে প্রথমে হলেন অসুস্থ। তারপর একাধিক ধারায় আক্রান্তদেরই করা হল গ্রেফতার। চোখের জলে 'অবিচার'-এর অভিযোগ তোলার পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এর মাঝেই সামনে এল এক ভিডিও।
যেখানে জনৈক পুলিশকে চাকরিপ্রার্থীদের উদ্দেশে বলতে শোনা গেল, 'মরে গেলে দায়িত্ব আমরা নিয়ে নেব'! অসুস্থকে হাসপাতালে পাঠানো তো দূরের কথা, থানায় বসিয়ে রেখে এরকম মন্তব্য করার পর পুলিশের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণের অভিযোগ করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। প্রসঙ্গত, ২২ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও কামড় দেওয়ায় যে পুলিশকর্মীর অভিযুক্ত, তাঁর বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোনও পদক্ষেপ। এর মাঝেই সামনে এসেছে চাকরিপ্রার্থীদের দেওয়া একটি ভিডিও।
থানায় নিগ্রহ, দাবি
চাকরিপ্রার্থীদের দেওয়া যে ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে জনৈক পুলিশকর্মী বলছেন, 'আপনারা ওখানে গিয়েছিলেন, ধরা পড়েছেন। আমরা ধরিনি। ওত আইন বুঝি না। উনি মরে গেলে তার দায়িত্ব আমরা নিয়ে নেব।' যার পরই কেন ভিডিও করছেন বলার পর মোবাইল ফোনগুলি কেড়ে নিতেও বলা হয়। আন্দোলনকারীদের দেওয়া ভিডিওতে যে পুলিশকে দেখা গিয়েছে, তিনি হেয়ার স্ট্রিট থানার অ্যাডিশনাল ওসি সচিন মণ্ডল। বর্তমানে হেয়ার স্ট্রিট থানার ওসি ছুটিতে থাকায় তিনি ভারপ্রাপ্ত ওসি হিসেবে কাজ করছেন।
গতকাল সন্ধেয় থানায় বসেই ভিডিও বার্তায় আক্রান্ত অরুণিমা পাল অভিযোগ করেছিলেন, 'পুলিশ হাতে কামড়ে দেওয়ার পর রক্ত ঝরছে। কিন্তু হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে থানায় বসিয়ে রেখেছে পুলিশ।' যে ভিডিও সন্ধে ৮ টা নাগাদ করা বলেও তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে ভিডিওতে। যদিও রাতের দিকে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলেই জানা যায়।
আক্রান্তদের বিরুদ্ধেই একাধিক ধারায় মামলা
প্রসঙ্গত, আক্রান্ত চাকরিপ্রার্থী অরুণিমা পাল-সহ ৩০ জন গ্রেফতার করার পর তাঁদেরই বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানো, পুলিশের উপর হামলা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। আজ তাঁদের ব্যাঙ্কশাল কোর্টে পেশ করা হয়। ওই ৩০জন বাদে বাকি চাকরিপ্রার্থীদের ছেড়ে দেওয়া হল হেয়ার স্ট্রিট থানা থেকেই। এদিন আক্রান্ত অরুণিমা পুলিশের গাড়ির পিছনে বসে কার্যত কান্না চাপা গলায় অভিযোগ করেন, 'দেখতে পাচ্ছেন তো কীরকম অবিচার হচ্ছে'। এদিকে, ঘটনার পর ঘটনার পর থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তাহীনতায় অরুণিমা পালের পরিবার।