কলকাতা: বছরের পর বছর ধরে র‍্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University student death)! হস্টেলে দাপাদাপি চলত প্রাক্তনীদের। সব জানত কর্তৃপক্ষ। এবিপি আনন্দর ক্যামেরার সামনে বিস্ফোরক দাবি করলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের সুপার (Main Hostel Super)। যদিও অনেকেরই প্রশ্ন তুলছেন, কেন এতদিন ধরে তিনি চুপ ছিলেন? 


যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের  (JU Student Death) মেন হস্টেল সুপার দীপায়ন দত্ত বলছেন, 'এটা আজকে প্রথম হচ্ছে না যাদবপুরে। এটা বরাবরই যাদবপুরে হয়ে এসেছে। কর্তৃপক্ষ সবই জানত, কিন্তু, কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নিত না'।


যাদবপুরের জমিতে র‍্যাগিং-রোগের বিষবৃক্ষ! দিনে দিনে, শাখায়-প্রশাখায় যা প্রকাণ্ড আকার নিয়েছে। দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পড়াশোনায় ভাল ছেলে-মেয়েরাই সেখানে সুযোগ পান। অথচ এত বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে র‍্যাগিং নামক ভাইরাসের উপস্থিতি বহুদিনের! দাবি করছেন কে? খোদ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) মেন হস্টেলের সুপার! দীপায়ন দত্তের কথায়, 'যেই রকম র‍্যাগিং শুনেছি A2-তে হয়েছে, সে রকম র‍্যাগিং আমার সি-ডি ব্লক, আমার এ ওয়ান, এ টু হয় না। আমার ব্লকে আমি সত্যি কোনওদিন শুনিনি এ রকম হয়! হয়ত রাত্রি ২টো অবধি জাগিয়ে রাখল। জেগে থাক। ঘরে ঘরে আয়, এসে নিজের পরিচয় দে। এগুলো হত'।


আলোচনার টেবিলে র‍্যাগিং: নদিয়া থেকে পড়তে আসা ছাত্রের মৃত্যুর পরে, র‍্যাগিং ফের উঠে এসেছে আলোচনার টেবিলে! এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ প্রাক্তনী এবং ৫ বর্তমান পড়ুয়া মিলিয়ে মোট ৯ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। প্রত্যেকেই থাকতেন যাদবপুরের মেন হস্টেলে! তাই প্রশ্ন উঠেছে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কি তার বিন্দুবিসর্গও জানত না?


হস্টেলে সুপারের কথায়, 'সিনিয়রদের প্রভাব তো সবসময়ে ছিল এখানে। আমি আসা থেকেই দেখেছি যে, সিনিয়রদের একটা প্রভাব এখানে ছিল'। হস্টেল সুপারের এই বিস্ফোরক বয়ানের পরে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, মেন হস্টেলে দিনের পর দিন ধরে র‍্যাগিং চলছে। প্রাক্তনীরা বেআইনিভাবে ঘর আঁক়ড়ে পড়ে আছেন মেন হস্টেলের মধ্যে যত্রতত্র নেশার উপদ্রব। অথচ এতদিন তিনি কেন প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি?


৯ অগাস্ট রাতে যাদবপুরের মেন হস্টেলের ৩ তলার বারান্দা থেকে পড়ে যান এক পড়ুয়া। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন, গুরুতর আহত সেই ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মাঝে কী কী ঘটেছিল মেন হস্টেলের মধ্যে? কে বা কার নির্দেশে হস্টেলের গেট বন্ধ রাখা হয়েছিল? এক্ষেত্রেই চর্চায় এসেছে নিরাপত্তারক্ষীর চাঞ্চল্যকর বয়ান।


এ দিনই নিরাপত্তারক্ষী জয়ন্তকুমার পালকে যাদবপুর থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, ৯ অগাস্ট রাতে তিনি ঠিক কী দেখেছিলেন? কে তাঁকে গেট বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল? হস্টেলের সুপার ও ছাত্ররা তাঁকে কী বলেছিল? ফলে যত সময় গড়াচ্ছে, যাদবপুরের মেন হস্টেলে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে ক্রমশ।


আরও পড়ুন: JU Student Death: বিবস্ত্র করে নাচানোর অভিযোগ করে জুটেছিল অপমান ! যাদবপুরের ডিন অফ স্টুডেন্টসর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ প্রাক্তনীর