কলকাতা : হিন্দি ছবি 'দ্য কেরালা স্টোরি' (The Kerala Story) নিষিদ্ধ করেছে রাজ্য সরকার। তৃণমূল (TMC) সরকারের আমলে এই প্রথম সরকারিভাবে কোনও ছবির প্রদর্শনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। 'দ্য কেরালা স্টোরি'র বিরুদ্ধে জাত-পাতের রাজনীতির পাশাপাশি কোনও একটি সম্প্রদায়কে হেনস্থার অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Chief Minister Mamata Banerjee)।


তামিলনাড়ুতে আগেই ছবির প্রদর্শন বন্ধ রেখেছেন মাল্টিপ্লেক্সের মালিকরা। আর এবার পশ্চিমবঙ্গে 'দ্য কেরালা স্টোরি' ছবি নিষিদ্ধ হওয়া নিয়ে জল গড়িয়েছে রাজনীতির ময়দানে। একের পর এক ট্যুইটে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিজেপি নেতারা। সিনেমা ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়ানো অবশ্য রাজ্যে বা দেশে নতুন নয়, এর আগেও বারবার দেখা গিয়েছে এমন ঘটনা।


এর আগে বারেবারে শাসকের রোষানলে পড়ে সিনেমা। ২০০২ সালে নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) যখন গুজরাতের মুখ্য়মন্ত্রী তখন আমদাবাদ সহ গুজরাতের বিভিন্ন জায়গায় রক্তক্ষয়ী হিংসার প্রসঙ্গ থাকায়, BBC-র তথ্যচিত্র 'ইন্ডিয়া দ্য মোদি কোয়েশ্টেন' নিষিদ্ধ করে মোদি সরকার। এর আগে গুজরাতে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল পরজানিয়া এবং ফিরাক-এর মতো ছবি। গুজরাতে মুক্তি পায়নি আমির খান ও কাজল অভিনীত ফনা।


শুধু কেন্দ্র নয়, রাজ্যেও এই উদাহরণ রয়েছে। বাম আমলে ২০০৬-এ নন্দনে সুমন মুখোপাধ্যায়ের ছবি ‘হারবার্ট’-এর (Harbart) প্রদর্শনের অনুমতি নাকচ করে দেওয়া হয়েছিল ৷ দু’হাজার একেও একইভাবে চলচ্চিত্রের ওপর নেমে এসেছিল শাসকের খাড়া ৷ সেবার আলেকজান্ডার সকুরভের ছবি টরাসের প্রদর্শনে আপত্তি জানিয়েছিলেন বিমান বসু ৷ লেনিনকে হেয় করা হচ্ছে অভিযোগে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল একটি সংগঠন ৷ নিট ফল ছবিটি তুলে নেওয়া হয়েছিল ৷


১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থার সময় কিসসা কুর্সি কা (Kissa Kursi Ka) ছবির মুক্তিতে বাধা দেওয়া হয়েছিল । বলা হয় এর নেপথ্য়ে ছিলেন সঞ্জয় গান্ধী সেই ছবি কোনওদিন মুক্তির মুখ দেখেনি। জরুরি অবস্থার সময় বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল গুজলাজ পরিচালিত সুচিত্রা সেন ও সঞ্জীব কুমার অভিনীত বিখ্য়াত ছবি আঁধি। জনতা সরকার ক্ষমতায় আসার পর আঁধি মুক্তি পায় এবং সুপারহিট হয়।


আরও পড়ুন- হুড়মুড়িয়ে ছিঁড়ে পড়ল নার্সিংহোমের লিফট, কসবায় গুরুতর আহত চিকিৎসক, মৃত্যু স্ত্রীর


প্রসঙ্গত, দ্য কেরালা স্টোরি নিষিদ্ধ করলেও ৬ বছর আগে ২০১৭-র ২০ নভেম্বর পদ্মাবত সিনেমা নিয়ে দেশজোড়া বিতর্কের মধ্যে বাক্ স্বাধীনতার ওপর জোর দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইটে লিখেছিলেন, পদ্মাবতী বিতর্ক শুধু দুর্ভাগ্যজনকই নয়, একটি রাজনৈতিক দল পরিকল্পিতভাবে আমাদের বাক্ স্বাধীনতা হরণ করছে। আমরা এই সুপার এমার্জেন্সির নিন্দা করছি। চলচ্চিত্র জগতের সবাই একযোগে প্রতিবাদ করুন। পদ্মাবত সিনেমার প্রদর্শন নিয়ে সেদিন ভিন্ন মত পোষণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। 


আরও পড়ুন- অসময়ে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা এড়াতে কী কী করবেন এবং কী কী করবেন না