আবীর দত্ত, বিটন চক্রবর্তী , পূর্ব মেদিনীপুর: ময়নায় বিজেপির বুথ সভাপতিকে নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগে আজ শুভেন্দু অধিকারীর ডাকে ১২ ঘণ্টার বন্‍ধ। সকাল থেকে বন্ধ দোকানপাট। বন্‍ধ সফল করতে রাস্তায় নেমেছে বিজেপি। ময়নার অন্নপূর্ণা বাজারে বন্‍ধ ঘিরে বিজেপির পিকেটিং। বাঁশ দিয়ে রাস্তা ঘিরে ফেলা হয়। পুলিশের গাড়িকেও যেতে বাধা দেওয়া হয়। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ। অন্যদিকে, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে প্রস্তুত পুলিশও। রাস্তায় রাস্তায় মোতায়েন বিশাল পুলিশ বাহিনী। মজুত রয়েছে জলকামানও। এই নিয়ে ৭ দিনে রাজ্যে ৩ বিজেপি নেতার মৃত্যু ঘটল। 


আরও পড়ুন : 


 


প্রবল গ্রীষ্ম বাড়ায় অ্যাজ়মার প্রবণতা, তীব্র হয় কষ্ট, কীভাবে বাঁচবেন


গত ২৯ এপ্রিল জামুড়িয়ায় শুটআউটে মৃত্যু হয় বিজেপির কনভেনরের। গাড়ির মধ্যে থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধারের পর হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। গাড়ির পাশ থেকে উদ্ধার হয় গুলির খোল। রাজনৈতিক কারণেই খুন বলে দাবি করে বিজেপি নেতৃত্ব। মৃতের নাম রাজেন্দ্র কুমার সাউ।  বাড়ি রানিগঞ্জে। আসানসোল পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির আহ্বায়ক রাজেন্দ্র। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, শনিবার দুপুরে জামুড়িয়ার বোগরা এলাকায়, ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে নির্জন জায়গায় দীর্ঘক্ষণ এই সাদা গাড়িটি দাঁড়িয়ে ছিল। সন্দেহ হওয়ার গাড়ির কাছে যান স্থানীয়রা। তখনই দেখা যায়, গাড়ির ভিতরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক ব্যক্তি।


গত ২৭ এপ্রিল নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের অভিযোগে উত্তপ্ত কালিয়াগঞ্জে এবার পুলিশের বিরুদ্ধে যুবককে গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে। পরিবারের অভিযোগ, গভীর রাতে অভিযান চালানোর সময় গুলি চালায় পুলিশ। নিহত মৃত্য়ুঞ্জয় বর্মন, বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের খুড়তুতো ভাই। যদিও নিহত যুবককে নিজেদের কর্মী বলেই দাবি করে বিজেপি। পুলিশ গুলি চালিয়ে ঠিক করেনি, মন্তব্য করে বিতর্ক আরও উস্কে দেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত উপপ্রধান। এই ঘটনাকে কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির পারদ চড়ে হু হু করে। পরদিন কালিয়াগঞ্জকাণ্ডের প্রতিবাদে বিজেপির ডাকা উত্তরবঙ্গ বন‍্ধ ঘিরে, অশান্তির ছবি ধরা পড়ে জেলায় জেলায়। কোচবিহারে ভাঙচুর করা হল একের পর এক বাস। জুলুমবাজির ছবি ধরা পড়ে অন্যান্য জেলাতেও। 

 দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ


ময়নার নিহত বিজেপি নেতা বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়ার দেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিশেষ দল গঠন করে কলকাতার কমান্ড হাসপাতালে হবে ময়না তদন্ত। রাজ্যের ২ ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ উপস্থিত থাকতে পারবেন। চাইলে থাকতে পারবেন পরিবারের সদস্যরাও। জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পরিবার ও ময়না থানাকে দেবে কমান্ড হাসপাতাল। তমলুক হাসপাতালে পরিবারকে দেহ দেখিয়ে অবিলম্বে রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তায় মৃতদেহ কলকাতায় নিয়ে আসতে হবে এবং ফেরত নিয়ে যেতে হবে। ৪ সপ্তাহের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় থাকবে পরিবার। আগামী সোমবারের মধ্যে রাজ্যের রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট।