কলকাতা: একই রাতে তিন-তিনটি দুর্ঘটনা (accidents) ঘটে গেল শহরের (kolkata) বুকে। পার্ক সার্কাস (park circus) সাত মাথার মোড় (seven point crossing), মা উড়ালপুল (MAA Flyover) এবং সিঁথির মোড়- (Sinthi More) পর পর দুর্ঘটনা কলকাতায়। মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগ পার্ক সার্কাসে। অন্য দিকে, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মা উড়ালপুলের মধ্যেই বাতি স্তম্ভে ধাক্কা মারে একটি গাড়ি। আবার ভোর রাতে সিঁথিতে অন্য একটি ঘটনায় একটি লরিকে ধাক্কা মারে অন্য একটি লরি।
কী ঘটল?
রাত তখন সাড়ে ৩টে। পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট ক্রসিংয়ের কাছে হঠাৎই দুর্ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে খবর, রাস্তার পাশের স্তম্ভে ধাক্কা মেরে একটি গাড়ি উল্টে যায়। বিকট শব্দ শুনে ছুটে যান এলাকার বাসিন্দারা। উল্টে যাওয়া গাড়ি থেকে চালক-সহ তিনজনকে উদ্ধার করেন তাঁরা। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, চালক সহ তিনজনই মত্ত অবস্থায় ছিলেন। উদ্ধারের কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁরা হেঁটে এলাকা ছেড়ে চলে যান তাঁরা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি আটক করেছে পুলিশ। মা উড়ালপুলেও দুর্ঘটনা ঘটেছে একই রাতে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উড়ালপুলের মধ্যেই থাকা একটি বাতিস্তম্ভে ধাক্কা মারে একটি গাড়ি। ধাক্কার চোটে বাতিস্তম্ভ উপড়ে পড়ে অন্য লেনে। দুর্ঘটনার পর গাড়ি ফেলে চম্পট দিয়েছেন চালক, এমনই দাবি পুলিশের। আবার ভোররাতে সিঁথিতেও দুর্ঘটনা ঘটে। বিটি রোডে একটি লরিকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে অন্য একটি লরি। একই রাতে শহরের বুকে পর পর তিনটি দুর্ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনিক নজরদারি নিয়ে।
বেপরোয়া গতির জের...
গত মার্চে বেহালার একটি ঘটনার কথা গত রাতের পর মনে পড়ে যাচ্ছে অনেকের। প্রাথমিক ভাবে জানা যায়, মত্ত অবস্থায় স্টিয়ারিংয়ের সামনে বসে ছিলেন চালক। ল্যাম্পপোস্টে ধাক্কা মারে গাড়ি। এতেই শেষ নয়। এক সাইকেল আরোহীকেও ধাক্কা মেরেছিল সেটি। গাড়ির ধাক্কায় আহত হন সাইকেল আরোহী। মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন চালক, দাবি পুলিশের। আটক করা হয় বেপরোয়া গাড়িটিকে, ধৃত চালক। এর পর গত অগাস্টেও বালিগঞ্জে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় এক জনের! ওই মহিলা পথচারীকে পিষে মারার অভিযোগ ওঠে বিলাসবহুল গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে। পরপর দুটি গাড়িকে ধাক্কা মেরে মহিলা পথচারীকে ধাক্কা মেরেছিল ঘাতক গাড়িটি, অভিযোগ এমনই। ফাঁকা রাস্তায় ‘জয় রাইডে’র বলি হিসেবে প্রাণ যায় তাঁর। প্রসঙ্গত, বছরপাঁচেক আগে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মডেল সনিকা সিংহ চৌহানের মৃত্যুতে অভিযোগের আঙুল ওঠে অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের দিকে। তাঁর বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে পুলিশ। অভিনেতার বিরুদ্ধে টালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করে সনিকার পরিবারও। বিক্রমের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর জন্যই দুর্ঘটনায় সনিকার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর মামা। পুলিশ সূত্রে খবর আসে, বিক্রমের বিরুদ্ধে যে সুয়োমোটো মামলা রুজু হয়েছিল, তার তদন্তভার দেওয়া হয় লালবাজারের ট্রাফিক বিভাগের ফ্যাটাল স্কোয়াডকে। পুলিশের দায়ের করা মামলায় গাফিলতির জেরে মৃত্যু, সম্পত্তির ক্ষতি এবং বেপরোয়া গাড়ি চালানোর অভিযোগ আনা হয়। সূত্রের খবর ছিল, সনিকার পরিবারের অভিযোগের ক্ষেত্রেও একই ধারা প্রযোজ্য করা হবে।
আরও পড়ুন:দিল্লির সঙ্গে পাল্লা, ভীষণই উদ্বেগের কলকাতার বায়ু দূষণের মাত্রা ! আঁতকে ওঠা পরিসংখ্যান