কলকাতা: আলিপুর চিড়িয়াখানায় ফের বাঘিনীর মৃত্যু। গত তিন মাসে এই নিয়ে পর পর তিনটি বাঘিনীর মৃত্যু হল। মৃত বাঘিনীর শরীরে পরজীবী বাসা বেঁধেছিল বলে জানা যাচ্ছে। যদিও তার দরুণ মৃত্যু হতে পারে কি না, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। একদিন আগেই বাঘিনীর শরীরের ময়নাতদন্ত হয়েছে। ভিসেরা পরীক্ষার জন্যও পাঠানো হয়েছে নমুনা। (Tigress Dies in Kolkata Zoo)

Continues below advertisement

এর আগে, সেপ্টেম্বর মাসে মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই বাঘিনীর মৃত্যু হয় কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায়। বছর শেষ হওয়ার আগে ফের একটি বাঘিনী মারা গেল সেথানে। গতবছর অগাস্ট মাসেই ওড়িশার নন্দনকানন থেকে আনা হয়েছিল তাকে। বয়স হয়েছিল মাত্র ২ বছর ১০ মাস। আলিপুর চিড়িয়াখানায় পর পর বাঘিনীর মৃত্যু যথেষ্ট উদ্বেগ ও চিন্তাজনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। (Alipore Zoo)

তৃতীয় এই বাঘিনীটি গত মঙ্গলবার মারা গিয়েছে। তাকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় রাতে। বুধবার আলিপুর পশু হাসপাতালে ময়নাতদন্তে হয়। তবে কী কারণে মৃত্যু হল বাঘিনীটির, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে।ভিসেরা রিপোর্ট আসারও অপেক্ষা হচ্ছে। আলিপুর চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর জানিয়েছেন, আলিপুর চিড়িয়াখানার নিয়ম মেনেই ময়নাতদন্ত হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী সবকিছু বোঝা যাবে।

Continues below advertisement

ওই বাঘিনী বেশ কিছুদিন ধরেই শারীরিক ভাবে অসুস্থ ছিল, তার শরীরে পরজীবী বাসা বেঁধেছিল বলেও জানা যাচ্ছে। যদিও ব্যাঘ্র বিশেষজ্ঞদের দাবি, ২ বছর ১০ মাস বয়সি বাঘিনীর এহেন মৃত্যু উদ্বেগজনক। কারণ এই বয়সকাল বাঘের বৃদ্ধির সময়। সেই সময় আচমকা রয়্যাল বেঙ্গলের মৃত্যু হওয়ার ঘটনা চিন্তাজনক। এর আগে, সেপ্টেম্বর মাসে যে দুই বাঘিনী মারা যায়, সেই সময় রিপোর্টে বলা হয়, বার্ধক্যজনিত কারণেই মারা গিয়েছে দুই বাঘিনী। কিন্তু মাত্র ২ বছর ১০ মাস বয়সে এমন মৃত্যু কাম্য নয় বলে মনে করা হচ্ছে। 

তৃতীয় বাঘিনীটির শরীরে পরজীবী বাসা বেঁধেছিল বলে অরণ্য ভবন সূত্রে খবর। কিন্তু সেই নিয়েও প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে বলে মনে করছেন ব্য়াঘ্র বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, সঠিক চিকিৎসা হলে মৃত্যু হওয়ার কথা নয়। তাহলে কি রক্ষণাবেক্ষণ বা দেখভালে খামতি রয়ে যাচ্ছে? উঠছে প্রশ্ন। তবে মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে পর পর তিন বাঘিনীর মৃত্যুতে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। নেচার এনভারয়নমেন্ট অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ সোসাইটির সেক্রেটারি বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, "ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না এলে নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না, কী থেকে মারা গিয়েছে। আমি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব, বাঘের স্বাস্থ্য যেন সময় সময়ে পরীক্ষা করে দেখা হয়। ক্যান্সার ছাড়া সব রোগেরই ওষুধ আছে। সময়ে চিকিৎসা হলে হয়ত সারত। ২ বছর ১০ মাস মানে বাড়ন্ত বাঘ। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। কোনও এমন প্যারাসাইট হয়ত রয়েছে। শরীরে কী ভাবে ঢুকছে, পরীক্ষা না হলে বোঝা যাবে না।"