কলকাতা: প্রাপ্য বকেয়ার দাবিতে, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ নিয়ে দিল্লিতে ধর্না কর্মসূচি তৃণমূলের (TMC Delhi Protests)। ২ ও ৩ অক্টোবর দিল্লিতে ধর্না-আন্দোলন জোড়াফুল শিবিরের, যাতে নেতৃত্ব দেবেন  তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় (Abhishek Banerjee। সেই মতো রাজধানীতে পৌঁছে গিয়েছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা। কিছু বাস পৌঁছবে সোমবার সকালে। তার আগে রবিবার রাতে দিল্লিতে সাংসদ সৌগত রায়ের বাসভবনে রণকৌশল বৈঠকে যোগ দিলেন দলের নেতা-সাংসদরা। অভিষেক সেই বৈঠকে নেতৃত্ব দেন। সেখানে তিনি জানান, ধর্নার জন্য মৌখিক অনুমতি মিললেও, এখনও পর্যন্ত লিখিত অনুমতি দেয়নি দিল্লি পুলিশ। অনুমতি চাওয়া হলেও, সব বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। 


সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, শতাব্দি রায়, বাবুল সুপ্রিয়, ব্রাত্য বসু, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য-সহ তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী-সাংসদরা এদিন সৌগতর বাড়ির রণকৌশল বৈঠকে অংশ নেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, সেখানে অভিষেক বলেন, "কেন্দ্রীয় বঞ্চনার জেরে মানুষের জীবন কতটা বিপর্যস্ত, তা নবজোয়ার কর্মসূচির সময় উপলব্ধি করেছি। জেলায় জেলায় গিয়ে মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনেছি। তখনই দিল্লিতে গিয়ে প্রতিবাদ করতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নিই। প্রশাসনের কাছে আমরা অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু সমস্ত অনুমতি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। যন্তরমন্তরে কর্মসূচির জন্য মৌখিক অনুমতি মিললেও, লিখিত অনুমতি দেওয়া হয়নি এখনও।"


তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সোমবার রাজঘাটে দেড়টা নাগাদ ধর্না কর্মসূচি করবে তৃণমূল। মহাত্মনা গাঁধীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে চলবে সত্যাগ্রহ। তার পর তাঁর বাড়িতে আবারও বৈঠক রয়েছে। সেখানে মঙ্গলবার যন্তরমন্তরে অবস্থান কর্মসূচি, ডেপুটেশন দেওয়া নিয়ে আলোচনা চলবে। দিল্লি পুলিশ যেহেতু অনুমতি দেয়নি, তাই কোন কৌশলে এগনো হবে, ঠিক হবে। পুলিশের আচরণ নেতিবাচক হলে, সেই মতো পদক্ষেপ গৃহীত হবে। এদিনের বৈঠকে আরও যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, তা হল, ১০০ দিনের কাজ করেও যাঁরা টাকা পাননি, তাঁদের যন্তরমন্তরে নিয়ে আসার পাশাপাশি ছাত্রযুবদের মাধ্যমে একাধিক সমস্যা তুলে ধরা হবে। নতুন সংসদভবন তৈরিতে ১৫০০ কোটি টাকা ব্যয় করলেও ১০০ দিনের কাজ, আবাসের টাকা আটকে রাখা হয়েছে কেন, প্রশ্ন তোলা হবে সেখানে। 


আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ, 'এই টাকা কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়', সরাসরি মোদিকে নিশানা অভিষেকের


অনুমতি না মিললেও কর্মসূচি চলবে বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছে তৃণমূল। তার কৌশল রচনার জন্যই এদিন বৈঠক হয়। সোমবার, গাঁধী জয়ন্তীতে রাজঘাটে ধর্না কর্মসূচি রয়েছে তাদের। মঙ্গলবার যন্তরমন্তরে মূল অবস্থান বিক্ষোভের কথা রয়েছে। সেখান থেকে কৃষিভবন অভিযানের পরিকল্পনা জোড়াফুল শিবিরের। কিন্তু লিখিত অনুমতি না মেলায়, তা আদৌ সম্ভব হবে কিনা, সেটাই দেখার।


তবে বাংলার প্রাপ্য টাকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন অভিষেক। রবিবার দিল্লিতে নেমেই বিমানবন্দরের বাইরে অভিষেক বলেন, "বাংলার প্রাপ্য টাকা না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। পারলে আটকে দেখাও।" কর্মসূচি আটকাতে ট্রেন, বিমান বাতিল করেছে বিজেপি, এই অভিযোগও তোলেন তিনি। ১০০ দিনের কাজ করেও দু'বছর ধরে যে জব কার্ড হোল্ডাররা টাকা পাননি, তাঁরাও দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। প্রয়োজনে অনন্তকাল ধরে আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন অভিষেক। 


যদিও এর পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, "কেউ টাকা আটকায়নি। হিসেব চাওয়া হয়েছে। যন্তরমন্তরে যা খুশি করুন, এপাং, ওপাং, ঝপাং, আমরা সবাই কোলা ব্যাঙ। যন্তরমন্তর্রে বাইরে কিছু করতে যান, ওখানে কিন্তু বিনীত গোয়েল নেই, অমিত শাহের পুলিশের লাঠির দৈর্ঘ্য ৬ ফুট।" সবমিলিয়ে রাজনীতির পারদ চরমে।