আশাবুল হোসেন, সন্দীপ সরকার: পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর, আগামী সপ্তাহেই তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের (21 July commemoration) সমাবেশ। তার আগে শুক্রবার হয়ে গেল খুঁটিপুজো।  তার জন্য বিধাননগরে কর্মী-সমর্খদের জন্য থাকা-খাওয়ার কী বন্দোবস্ত, ঘুরে দেখলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। যদিও ২১ জুলাই উপলক্ষে স্বাস্থ্য দফতরের একটি নির্দেশিকা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক (TMC 21 July)। 


পঞ্চায়েত নির্বাচন মিটতেই শুরু হয়ে গেল একুশের কাউন্টডাউন। প্রস্তুতি তুঙ্গে তৃণমূলের মেগা ইভেন্টের। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরুর আগে, শুক্রবার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে হল ২১ জুলাইয়ের খুঁটিপুজো। সুব্রত বক্সি সহ তৃণমূলের অন্যান্য শীর্ষ নেতার পাশাপাশি, তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিন উপস্থিত ছিলেন যুব তৃণমূল নেত্রী সায়নী ঘোষও, কয়েকদিন আগেই নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে যাঁকে তলব করেছিল ইডি।


এদিন ২১ এ জুলাই উপলক্ষে দলীয় কর্মীদের থাকা, খাওয়ার ব্যাবস্থাপনা খতিয়ে দেখতে বিধাননগরে মেলা প্রাঙ্গনে যান অভিষেক। তবে ২১ জুলাই উপলক্ষে স্বাস্থ্য দফতরের একটি নির্দেশিকা ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। নির্দেশিকায়, রাজ্যের সমস্ত জেলার মুখ্য আধিকারিককে বলা হয়েছে, ২১ জুলাই শহিদ দিবস উপলক্ষে জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কের ধারে প্রস্তুত রাখতে হবে মেডিক্যাল টিম। সমস্ত ব্লাড ব্যাঙ্কে পর্যাপ্ত রক্ত মজুত রাখতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছে চিকিৎসক মহলের একাংশ।


আরও পড়ুন:- Abhishek Banerjee: 'বিজেপি-র গুন্ডাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে হাইকোর্ট, শুভেন্দুকে বাঁচাচ্ছেন বিচারপতি মান্থা', সরাসরি আক্রমণে অভিষেক

রাজ্য জুড়ে নিয়োগ দুর্নীতি, ডিএ বঞ্চনা, আবাস দুর্নীতির ভূরি ভূরি অভিযোগ। তার পরও পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছে তৃণমূল। ২১ জুলাইয়ের আগে এই জয়ই জোগাচ্ছে বাড়তি অক্সিজেন দলকে। তবে এত সাফল্যের মধ্যেই নির্বাচনী সন্ত্রাসের কাঁটা বিঁধছে জোড়াফুল শিবিরকে। 


নির্বাচনী সন্ত্রাস নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধে চলেছেন বিরোধীর। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌঁধুরী তীব্র আক্রমণ করেছেন। তাঁর কথায় "শহিদ দিবসে বিজয় উৎসব হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ের উৎসব হতে চলেছে। সেই নির্বাচনে এতজনের মৃত্যু হয়ে গেল। কারা দায়ী, কে দায়ী? পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রাজনৈতিক সংস্কৃতি দাায়ী।"

প্রতি বছর ২১ জুলাই দিনটিকে শহিদ দিবস হিসেবে পালন করে তৃণমূল। তবে এবার একুশে জুলাই শ্রদ্ধা দিবসও পালন করবে তৃণমূল। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ঘোষণাই করেছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলী কর্মীদের মৃত্যুতেই এমন সিদ্ধান্ত। সেই নিয়েও যদিও কটাক্ষ শুনতে হয়েছে তৃণমূলকে। 

তবে এবারের ২১শে জুলাইয়ের আরও একটি কারণে বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগেই এটাই শেষ ২১ শে জুলাই। জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোট তৈরির জন্য় ইতিমধ্য়েই তৎপরতা শুরু হয়েছে। পটনায় বিরোধীদের বৈঠকে ছিলেন মমতা এবং অভিষেক। কিন্তু জাতীয় স্তরে একজোট হলেও, বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে বাম-কংগ্রেসের দ্বন্দ্ব চরমে। এমন পরিস্থিতিতে ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে লোকসভা নির্বাচন নিয়ে মমতা কী বলেন, সেদিকে নজর রাজনৈতিক মহলের।