আশাবুল হোসেন, কলকাতা: আগামী ১০ মার্চ ব্রিগেড সমাবেশ করবে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC Brigade Meeting)। বাংলার প্রতি কেন্দ্রের 'বঞ্চনার' প্রতিবাদে এই সমাবেশের ডাক দিয়েছে শাসক দল। ১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনা-সহ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের টাকা আটকে দেওয়ার প্রতিবাদ জানানো হবে এই সমাবেশে। ব্রিগেডের সভার নাম দেওয়া হয়েছে 'জনগর্জন সভা'। সভার প্রধান বক্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা ও বাঙালি আবেগ হাতিয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের। লোকসভা ভোটের আগে ব্রিগেডে শক্তিপ্রদর্শন তৃণমূল কংগ্রেসের।


রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট...
সন্দেশখালির ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে গত জানুয়ারি থেকে টালমাটাল রাজ্য রাজনীতি। এত দিন পেরিয়ে গেলেও কেন শেখ শাহজাহান ধরা পড়ল না, তা নিয়ে স্থানীয়দের তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের। বিপুল সমালোচনার ধাক্কা টের পাচ্ছে পুলিশ প্রশাসনও। বিরোধীরাও চেপে ধরার সুযোগ ছাড়ছে না। পরিস্থিতি যে বেশ কিছুটা অস্বস্তি তৈরি করেছে তা শাসকদলের নানা গতিবিধি থেকেই স্পষ্ট। অন্য দিকে,  এ রাজ্যে বিজেপি বিরোধী 'ইন্ডিয়া' জোটের হাল ঠিক কী হবে, সেই ছবিটিও স্পষ্ট নয়। তৃণমূলনেত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি 'একলা চলো' নীতি মেনে এগোবেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর তরফেও  তৃণমূলের সঙ্গে জোটের বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। সব মিলিয়ে রাজ্যে জোটের হাল বিশও বাঁও জলে।
এহেন পরিস্থিতিতে ব্রিগেড সমাবেশের নির্দিষ্ট তাৎপর্য রয়েছে বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের। এমনিতেই বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে ধারাবাহিক ভাবে সুর চড়িয়ে আসছে তৃণমূল। লোকসভা ভোটের আগে ব্রিগেডে সমাবেশ করে সেই অভিযোগের সুর আরও ধারাল করার পাশাপাশি বর্তমান অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সামলানোর কিছুটা হলেও সময় পাওয়া যাবে। সব দিক থেকেই এই সিদ্ধান্ত, ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের।


ডিওয়াইওএফআই...
গত ৭ জানুয়ারি ব্রিগেডে বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের সমাবেশ ঘিরে তুমুল আলোড়ন তৈরি হয়েছিল। কর্মী-সমর্থকের উপচে পড়া ভিড়, লাল-সাদা পতাকায় কার্যত ছেয়ে যায় মহানগরের নানা দিক। তবে কি বামেদের প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়া সংগঠন খানিক হলেও অক্সিজেন পেতে শুরু করল? এমনও আলোচনা শুরু হয়। পাল্টা মতও কিছু কম ছিল না। ব্রিগেড ভরলেও বামেদের ভোটবাক্সে তা কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। অন্য দিকে, বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা তা দেখে পোস্ট করেন, 'সিপিএম কবে লাস্ট ক্ষমতায় ছিল, আমরা ভুলে গেছি। না কেন্দ্রে ক্ষমতায় আছে, না রাজ্যে ক্ষমতায় আছে। তা সত্বেও যেভাবে মানুষ  ব্রিগেডে জমায়েত হয়েছিল, সেটা অবাক করার মতো। মুখ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী কারও ছবি ছিল না।'  


আরও পড়ুন:'আপনারা শাঁখা-চুড়ি পরুন, পুলিশের দায়িত্ব আমাদের দিন', ফুঁসে উঠলেন সন্দেশখালির মহিলা বাসিন্দা